রাজবাড়ীর ঐতিহ্যবাহী ডাঃ আবুল হোসেন কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা এবং পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান গতকাল ১১ই মার্চ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সকালে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রতিযোগিতার শুভ উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খান। এরআগে জাতীয় সংগীতের তালে তালে জাতীয় ও ক্রীড়া পতাকা উত্তোলন করা হয়।
কলেজের গভর্নিং বডির বিদ্যোৎসাহী সদস্য অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মোঃ শামসুল হকের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে পুলিশ সুপার এম.এম শাকিলুজ্জামান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হেদায়েত আলী চৌধুরী সোহরাব বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ চৌধুরী আহসানুল করিম।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধক জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খান বলেন, আমাদের বাবা-মা এখনো নিজেরা কম খেয়ে তার ছেলে মেয়েকে খাওয়ান। তারা আশা করে তার ছেলে মেয়েরা ভাল করবে, জীবনে প্রতিষ্ঠিত হবে। আর এই প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্যই আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসি। আমরা লেখাপড়া করি। আমরা আমাদের চাহিদাকে যতটুক সম্ভব কম রেখে আমাদের পিতা মাতাকে সহযোগিতা করতে হবে। আমাদের লেখাপড়ায় মনোযোগী হতে হবে। আমাদেরকে সংস্কৃতি চর্চায় মনোযোগী হতে হবে। খেলাধুলা করতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হবে। এই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য চারটি ভিত্তি নির্ধারণ করেছেন। এগুলো হলো স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট সোসাইটি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট ও স্মার্ট ইকোনমি। তার প্রথমটা হচ্ছে স্মার্ট সিটিজেন। আর স্মার্ট সিটিজেন হলে বাকীগুলো হয়ে যাবে। এখন স্মার্ট সিটিজেন হতে হলে আমাদেরকে সেই রকমভাবে চেষ্টা করতে হবে। অধ্যবসায় করতে হবে। আমাদেরকে মোবাইল ফোনের আসক্তি থেকে বের হয়ে আসতে হবে। আমাদেরকে লেখাপড়া করতে হবে, শরীর চর্চা করতে হবে, খেলাধুলা করতে হবে, সাংস্কৃতিক চর্চা করতে হবে। তাহলে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট সিটিজেন হতে পারবো। আমরা দেখি আজকাল যে, আমি একটা স্মার্ট ফোন নিয়ে বসে থাকি, আমার ডানে কি আছে, বামে কি আছে, সামনে কি আছে, পিছনে কি আছে আমরা তা খেয়াল করি না। এটা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। আমাদের একত্রে সবাইকে কাজ করতে হবে। একটা টিম হিসেবে কাজ করতে হবে। তাহলে কিন্তু আমরা এদেশকে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বানাতে পারবো।
পুলিশ সুপার এম.এম শাকিলুজ্জামান, শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা আমাদের কর্তব্য কাজ ভুলে যাই। আমাদের দায়িত্বের জায়গায় স্থির থেকে আমাদের কর্তব্য পালনে ব্রতী হতে হবে। নীতি নৈতিকতার জায়গাগুলো পরিস্কার থাকতে হবে। তবেই আমার মনে হয় তোমরা(শিক্ষার্থীরা) জীবনের উদ্দেশ্য কি সেটা উপলব্ধী করতে পারবে।
তিনি বলেন, আমরা যারা একটু অগ্রজ আছি আমরা কি আমাদের দায়িত্বটুকু ঠিকমত পালন করতে পারছি কিনা? সেই প্রশ্নটি আমার নিজের কাছেও আছে।
পুলিশ সুপার এম.এম শাকিলুজ্জামান শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, এখানে অনেকেই হয়তো আছে যাদের বাবা পেয়াঁজ ক্ষেতে কাজ করছে। কিন্তু তুমি একটি সুন্দর পোষাক পড়ে এই সুন্দর পরিবেশে আমাদের সামনে বসে আছো। তোমরা কি ভেবেছো তোমাদের পিতা মাতার স্বপ্নটা কত দিগন্ত বিস্তৃত। কত বড়। তাদের এই ত্যাগ, তাদের এই জীবন সংগ্রাম এগুলো কি তোমরা বক্ষে ধারণ করে আছো। নাকি তোমরা তেমনি চাকচিক্কোময়তার দিকে ছুটছো। আমি একটা সার্টিফিকেট পাবো। একটা চাকুরী পাবো। কিংবা যেনতেন ভাবে আমি এটা চাই, ওটা চায় বলে আমার জীবনকে আমি অর্জন করবো। কিন্তু এটা তো অর্জন নয় বিসর্জন। তোমরা এই নীতি নৈতিকতার ব্রত নিয়ে পথ চলো। আমার ধারণা তোমরা সফল হবে।
বিকালে বিভিন্ন ইভেন্টে বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রধান অতিথি হিসেবে পুরস্কার বিতরণ করেন কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি ও ঢাকা-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সভাপতি এডভোকেট সানজিদা খানম।
এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে রাজবাড়ীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) সূবর্ণা রানী সাহা, কলেজের গভর্নিং বডি’র বিদ্যোৎসাহী সদস্য রেজাউজ্জামান লিটন ও সাংবাদিক বাবু মল্লিকসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কলেজের সহকারী অধ্যাপক মিরুনা বানু মুন, রশিদ আল কামাল ও সানজিদা আক্তার।
ঢাকা অফিস : ৩৪/১ ডি-২, হাটখোলা সড়ক (অভিসার সিনেমা হলের পিছনে), ঢাকা-১২০৩। ফোন অফিস : 0641-66666, বার্তা বিভাগ : 66333, রাজবাড়ী প্রেসক্লাব অফিস : 66660, বাসা : 65728, মোবাইল : 01713-489472, 01715-019375, 01715-621243, ই-মেইল : motin_rajbari@yahoo.com এবং matrikantha@gmail.com