মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২৪ বাস্তবায়ন উপলক্ষে ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত রাজবাড়ী জেলা টাস্কফোর্স কমিটির প্রস্তুতিমূলক সভা গতকাল ৮ই অক্টোবর সকালে জেলা প্রশাসক ও জেলা মৎস্য দপ্তরের যৌথ আয়োজনে কালেক্টরেটের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।

 রাজবাড়ীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব) জ্যোতিশ্বর পালের সভাপতিত্বে প্রস্তুতিমূলক সভায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(প্রশাসন ও অর্থ) মোঃ শরীফ আল রাজীব পিপিএম, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ প্রকাশ রঞ্জন বিশ্বাস, জেলা যুবউন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ আব্দুল মজিদ, রাজবাড়ী প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি এম মনিরুজ্জামান, দৈনিক মাতৃকন্ঠের সিনিয়র রিপোর্টার রফিকুল ইসলাম, বিজয় টিভির জেলা প্রতিনিধি শেখ মামুন ও জেলে প্রতিনিধি মোঃ আসলাম মোল্লা বক্তব্য রাখেন।

 সভায় স্বাগত বক্তব্য ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পাওয়ায় পয়েন্ট উপস্থাপন এবং সভা সঞ্চালনা করেন রাজবাড়ী জেলার মৎস্য কর্মকর্তা(ভারপ্রাপ্ত) ও সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোস্তফা আল রাজীব।

 এ সময় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও এনডিসি নাহিদ আহমেদ, সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ দস্তগীর হুসাইন, সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ হাফিজুর রহমান, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা প্রকৌশলী সৈয়দ আরিফুল হক, সদর উপজেলা মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল, সহকারী মৎস্য অফিসার(ইলিশ প্রকল্প) বনি আমিন পিয়াস, দৌলতদিয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) ইলিয়াস আহমেদ, সদর উপজেলা মৎস্য অফিসের ক্ষেত্র সহকারী মোঃ ইয়াকুব আলী, জেলা মৎস্য অফিসের হিসাব রক্ষক মোঃ আব্দুল খালেক ও জেলে প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

 জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোস্তফা আল রাজীব বলেন, মা ইলিশের প্রজনন নিরাপদ রাখার লক্ষ্যে সরকারী নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী আগামী ১৩ই অক্টোবর থেকে ৩রা নভেম্বর পর্যন্ত ২২দিন সারাদেশের নদ-নদী ও সাগরে ইলিশ আহরণ, ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন, মজুত ও বিনিময় বন্ধ থাকবে। এ ব্যাপারে জেলার আওতাধীন নদীর তীরবর্তী এলাকার হাট-বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে মাইকিং-লিফলেট বিতরণ ও সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হবে। 

 তিনি আরও বলেন, অবৈধ পথে ইলিশ পাচার রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে সরকার। ইলিশ সম্পৃক্ত জেলা উপজেলায় নদীতে ড্রেজিং বন্ধে স্থানীয় প্রশাসন ও ব্যবস্থা নেবে। ইলিশের নিরাপদ প্রজননের মাধ্যমে ইলিশ সম্পদ উন্নয়নে যা যা করা দরকার তা করা হবে। এছাড়া মাছ ধরা বন্ধের সময় যাচাই-বাছাই করে নিবন্ধিত জেলেদের নানাভাবে সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয় থাকে। একই সঙ্গে তাদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছে সরকার।

 রাজবাড়ী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(প্রশাসন ও অর্থ) মোঃ শরীফ আল রাজীব পিপিএম বলেন, মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে জেলা পুলিশ সবসময় মৎস্য বিভাগসহ প্রশাসনকে সহযোগিতা করবে। জেলা পুলিশের পাশাপাশি নৌ পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ কাজ করবে। নৌপুলিশ নদীতে চেকপোস্টসহ অভিযানে সহযোগিতা করবে ও হাইওয়ে পুলিশ মহাসড়ক ও সড়কে চেকপোস্ট করবে। যাতে কেউ অভিযান চলাকালীন ট্রাকে অথবা যে কোন পরিবহনে ইলিশ মাছ পরিবহন করতে না পারে। সর্বপরি মা ইলিশ সংরক্ষণে সকলকে সচেতন হতে হবে।

 সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব) জ্যোতিশ্বর পাল বলেন, প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে মা ইলিশ রক্ষায় জোরদার অভিযান পরিচালনা করা হবে। আমাদের যথেষ্ট প্রস্তুতি থাকবে। নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে ইলিশ আহরণ করতে নদীতে নামলে শাস্তির আওতায় এনে জেল-জরিমানা করা হবে। খুব শিগগিরই অভিযানের জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হবে। ইলিশ রক্ষায় কঠোর ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। দিনে অভিযানের পাশাপাশি রাতেও অভিযান জোরদার করা হবে। সংশ্লিষ্ট জেলা-উপজেলায় বরফ কল বন্ধে স্থানীয় প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে। গত বছরের ন্যায় এবারও অবৈধ জাল উৎপাদনস্থলে অভিযান পরিচালনা করা হবে। অভিযান সুন্দরভাবে সমাপ্ত করার জন্য সাধারণ মানুষ ও জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করতে হবে। এ অভিযান সফল হলে মা ইলিশ টিকে থাকবে, পরে এর সুফল পাওয়া যাবে। ইলিশের উৎপাদন বাড়বে।