রাজবাড়ী সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোফাজ্জলের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু

স্টাফ রিপোর্টার || ২০২৪-১০-২৩ ১৫:৩৮:২১

image

 রাজবাড়ী সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের পুরাতন ব্যবহার যোগ্য আসবাবপত্র গোপনে নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করার অভিযোগে প্রধান শিক্ষক মোঃ মোফাজ্জল হোসেনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। 

 স্থানীয় সাপ্তাহিক সাহসী সময় পত্রিকায় গত ৩০শে সেপ্টেম্বর “মোটা অংকের অর্থ বেহাত॥কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই নিয়ম বহির্ভূতভাবে প্রধান শিক্ষক মোফাজ্জল হোসেন কর্তৃক- রাজবাড়ী সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে ব্যবহারযোগ্য পুরাতন আসবাবপত্র গোপনে নামমাত্র মূল্যে বিক্রির অভিযোগ” শিরোনামে সচিত্র সংবাদের প্রেক্ষিতে গত ১৪ই অক্টোবর রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক(ভারপ্রাপ্ত) সিদ্ধার্থ ভৌমিক স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। 

 তদন্ত কমিটিতে রাজবাড়ী জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী রতীশ চন্দ্র সেনকে আহ্বায়ক, জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ হাবিবুর রহমানকে সদস্য সচিব ও জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রুবাইয়াত মোঃ ফেরদৌসকে সদস্য করা হয়।

 গতকাল ২৩শে অক্টোবর দুপুর সোয়া ২টার দিকে রাজবাড়ী সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে আসেন ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি। ২ঘন্টার বেশি সময় ধরে বিদ্যালয়ে অবস্থান করে তদন্ত করেন তারা। 

 তদন্তকালে বিদ্যালয়ের ব্যবহারযোগ্য পুরাতন আসবাবপত্র গোপনে বিক্রির ঘটনায় প্রধান শিক্ষক মোঃ মোফাজ্জল হোসেনের অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য প্রমাণ মিলছে। কর্তৃপক্ষে লিখিত পূর্বানুমতি এবং সরকারী নীতিমালা অনুযায়ী নিলাম কমিটি গঠন ছাড়াই কিভাবে পুরাতন আসবাবপত্র বিক্রি করেন এমন প্রশ্নের কোন সদুত্তোর বা দালিলিক প্রমাণাদি প্রধান শিক্ষক দিতে পারেন নি বলে জানা গেছে।      

 পরে তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, রাজবাড়ী সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা তদন্ত করার আমরা বিদ্যালয়ে সরেজমিনে এসেছি। আমাদের তদন্ত চলমান রয়েছে। আমরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জেলা প্রশাসকের কাছে হস্তান্তর করবো।

 তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক রাজবাড়ী শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী রতীশ চন্দ্র সেন বলেন, তদন্ত চলমান রয়েছে। তদন্তের স্বার্থে আমরা এখনই কিছু বলতে পারছি না। আমরা যথাসময়ে তদন্ত প্রতিবেদন জেলা প্রশাসক বরাবর প্রদান করবো।

 সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক মোঃ মোফাজ্জল হোসেন কর্তৃক গোপনে বিক্রি করা মালামালের মধ্যে রয়েছে প্লাস্টিক পিভিসি সিলিং ৪৫১ কেজি, হাউ প্লাস্টিক পিভিসি ১১৮ কেজি, প্লাষ্টিক চেয়ার ২২৮ কেজি, কার্টুন ৩৭০ কেজি, কাগজ ১৮৭ কেজি, ফ্যান ১৭টি, ফোম চেয়ার ১৮টি, লোহার রড ১৯৯ কেজি, অ্যাঙ্গেল ১৩১ কেজি ও টিন ৩৮৭ কেজি। আর এসব মালামালের মূল্যে ধরা হয়েছে মাত্র ৬৯ হাজার ৫০১ টাকা।

 সূত্রটি জানায়, কাগজ কলমে প্রধান শিক্ষক উল্লেখিত দর দেখালেও বাস্তবে ব্যবহার যোগ্য পুরাতন এসব মালামাল বিক্রি করেছেন আড়াই লক্ষাধিক টাকা। অনেক আইটেমের মালামাল পিস হিসেবে বিক্রি করা হলেও কেজি দরে বিক্রির মূল্য দেখানো হয়েছে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে প্রধান শিক্ষক কর্তৃপক্ষের(স্কুল পরিালনা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসকের) বৈধ অনুমতি ছাড়াই ব্যবহার যোগ্য পুরাতন মালামাল নিলাম বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই গোপনে উক্ত মালামাল বিক্রি করে হাতিয়ে নিয়েছেন মোটা অংকের অর্থ। তার এই অবৈধ কাজে সহযোগিতা করেছে বিদ্যালয়ের কয়েক শিক্ষক।       

 বিক্রিকৃত এসব মালামালের মধ্যে ৩০০টি ভাল প্লাষ্টিকের চেয়ার রয়েছে। সেগুলোও বিক্রি দেখানো হয়েছে ৪৫ টাকা কেজি দরে। আর ১৮টি ফোমের চেয়ার বিক্রি মূল্য দেখানো হয়েছে মাত্র ১০০ টাকা পিস করে। এছাড়াও ১৭টি সিলিং ফ্যানের মূল্য ধরা হয়েছে ৩৫০ টাকা পিস হিসেবে। অন্যান্য মালামালের মূল্যও কম দেখানো হয়েছে। এছাড়াও কিছু আইটেমের মালামাল তালিকা ছাড়াই বিক্রি করা হয়। 

 গত ২৯শে সেপ্টেম্বর দুপুরে রাজবাড়ী শহরের পৌর ইংলিশ সুপার মার্কেটের আন্ডার গ্রাউন্ডের দুইটি ভাঙ্গুরীর দোকানে গিয়ে বিক্রি হওয়া এসব মালামাল দেখা গেছে। 

 নাম প্রকাশে অনিচ্ছিুক একজন বলেন, গত ২৬শে সেপ্টেম্বর বৃষ্টির মধ্যে তরিঘরি করে প্লাস্টিকের চেয়ার ও পিভিসি সিলিংগুলো বিদ্যালয় থেকে ভ্যান গাড়ীতে করে ভাঙ্গুরীর দোকানে আনা হয়।

 

ঢাকা অফিস : ৩৪/১ ডি-২, হাটখোলা সড়ক (অভিসার সিনেমা হলের পিছনে), ঢাকা-১২০৩। ফোন অফিস : 0641-66666, বার্তা বিভাগ : 66333, রাজবাড়ী প্রেসক্লাব অফিস : 66660, বাসা : 65728, মোবাইল : 01713-489472, 01715-019375, 01715-621243, ই-মেইল : motin_rajbari@yahoo.com এবং matrikantha@gmail.com