“অন্তর্ভুক্তিমূলক টেকসই ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে, বিকশিত নেতৃত্বে এগিয়ে যাবে প্রতিবন্ধী জনগণ” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রাজবাড়ীতে ৩৩তম আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস ও ২৬তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস উপলক্ষে গতকাল ৩রা ডিসেম্বর সকাল ১০টায় কালেক্টরেটের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

 অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সিদ্ধার্থ ভৌমিকের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বক্তব্য রাখেন।

 জেলা প্রশাসন, জেলা সমাজসেবা কার্যালয় এবং প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের যৌথ আয়োজনে আলোচনা জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন অফিসার অজয় কুমার হালদারের সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ ইব্রাহীম টিটন, পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(প্রশাসন ও অর্থ) মোঃ শরীফ আল রাজীব ও জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রুবাইয়াত মোঃ ফেরদৌস বক্তব্য রাখেন।

 অন্যান্যের মধ্যে হাসপাতাল সমাজসেবা অফিসার বোরহান উদ্দিন হাওলাদার, এনজিও রাসের নির্বাহী পরিচালক ও জেলা এনজিও ফেডারেশনের সভাপতি মোঃ লুৎফর রহমান লাবু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

 আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের কনসালটেন্ট ডাঃ মোঃ নাসির উদ্দিন আহমেদ।

 এ সময় জেলা মহিলা বিষয়য়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ আজমীর হোসেন, সহকারী জেলা শিক্ষা অফিসার শামসুন্নাহার, ব্র্যাকের ডিস্ট্রিক্ট কো-অর্ডিনেটর প্রণব কুমার রায় ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

 প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, আমরা যদি আমাদের মায়েদের কথা চিন্তা করি তাদের যদি উন্নত চিকিৎসা দেই তাহলে প্রতিবন্ধী বাচ্চা জন্মের রেসিও কিছুটা হলেও কমবে। কিন্তু একজন গর্ভবতী মায়ের শুধু উন্নত চিকিৎসাই যথেষ্ট নয় তার মানসিক সাপোর্টটাও দরকার। মানসিকভাবে একজন গর্ভবতী মা সাপোর্ট না পেলে তার ওপর ইমপ্যাক্টটা পড়বেই। আমরা যদি সুস্থ সমাজ গঠন করতে চাই, আমরা যদি সুস্থ সন্তান পৃথিবীতে আনতে চাই তাহলে সমাজটাকে আগে সুস্থ করতে হবে। সমাজের সবাইকে সুস্থ মেন্টালিটি নিয়ে থাকতে হবে। আমরা যদি একজন অসুস্থ থাকি, বা পরিবারের কেউ যদি অসুস্থ থাকে তাহলে পরিবার সুন্দর থাকবে না। তেমনি সমাজের একটি পার্ট যদি অসুস্থ থাকে তাহলে সমাজ সুন্দর হবে না। দেশের একটা সমাজ যদি অসুস্থ থাকে তাহলে দেশ সুন্দর হবে না। তাহলে একটি দেশ গড়তে হলে সবাইকে সুস্থ হতে হবে। সেই সুন্দর দেশ গড়তে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা একটি সুন্দর দেশ গড়তে পারবো।

 জেলা প্রশাসক আরও বলেন, কোন প্রতিবন্ধী সন্তান আমাদের সমাজের জন্য বোঝা না, তারা আমাদের সম্পদ। আমরা কখনোই তাদেরকে অবহেলা করবো না। তারা আমাদের সমাজের একটি অংশ। আমরা তাদেরকে সাথে নিয়েই আগামীর বাংলাদেশ গড়তে চাই।

 আলোচনা সভা শেষে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার ৩জন বিজয়ী ও সমন্বিত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষা কার্যক্রমের ‘হাড়িভাঙ্গা’ ক্যাটাগরিতে ৩জন বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এছাড়াও প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্র থেকে ১৫টি ও এনজিও রাসের থেকে ২টি হুইল চেয়ার বিতরণ করা হয়েছে।