ঢাকা মঙ্গলবার, মে ৭, ২০২৪
শীত মৌসুমে এবারেও জমজমাট রাজবাড়ী শহরের রেলগেটের পুরাতন কাপড় মার্কেট
  • মীর সামসুজ্জামান সৌরভ
  • ২০২৩-০১-১৫ ১৩:৩৬:০৯

রাজবাড়ীতে শীতের প্রকোপ বাড়তে থাকায় চাহিদা বেড়েছে গরম কাপড়ের। বিত্তশালীরা অভিজাত বিপণী বিতান থেকে কেনাকাটা করলেও নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষেরা ছুটছে রাজবাড়ী শহরের ১নং রেলগেট এলাকায় রেললাইনের ওপর অস্থায়ী ভাবে গড়ে ওঠা পুরাতন কাপড়ের মার্কেটে।
  রেল লাইনের ওপর অস্থায়ী ভাবে গড়ে ওঠায় মার্কেটটা সবার কাছ রেলপ্লাজার নামে পরিচিত। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত ৯ টা ১০টা পর্যন্ত বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ এই রেলপ্লাজা থেকে পুরাতন কাপড় কিনে থাকেন। এই পুরাতন কাপড়ের মার্কেটে প্রতিদিন লক্ষাধিক টাকার কাপড় বিক্রি হয় বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
  সরেজমিনে দেখা যায়, রেলপ্লাজা নামে পরিচিত পুরাতন কাপড়ের মার্কেটে ক্রেতাদের বেশ ভিড়। এই অস্থায়ী মার্কেটটিতে মোট ৪২টি দোকান বসেছে।ক্রেতা বিক্রেতাদের হাক ডাকে মুখরিত পুরো এলাকা। যেখানে নিম্ন আয়ের মানুষের পাশাপাশি মধ্যবিত্তরাও এসেছে স্বল্প দামে গরম কাপড় কিনতে। রেল লাইনের ওপর গড়ে ওঠা এসব দোকানে কোরিয়া, তাইওয়ান, জাপানসহ বিভিন্ন দেশের পুরাতন ব্লেজার, জ্যাকেট, সোয়েটার টাউজার, মাপলার, টুপি, হুডি, ফুলহাতা গেঞ্জি, কম্বল সহ পুরুষ,মহিলাসহ ছোট বাচ্চাদের শীতবস্ত্র বিক্রি হচ্ছে। প্রতিদিন এই রেলপ্লাজায় প্রায় তিন লাখ টাকার বেশি কাপড় বিক্রি হয় বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
  জানা গেছে, প্রতি শীতের মৌসুমে অক্টোবর মাস থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত এই ৪ মাস চলে পুরাতন শীতের কাপড়ের বেচাকেনা। 
  ব্যবসায়ীদের তথ্য অনুসারে, শীত মৌসুমে প্রতিটি দোকানে প্রতিদিন কমপক্ষে গড়ে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকার কাপড় বিক্রি হয়। সেই হিসেবে ৪২টি দোকানে প্রতিদিন প্রায় ৩ লাখ টাকা বিক্রি হয়।
 রেল লাইনের ওপর গড়ে ওঠা পুরাতন মার্কেটে কাপড়ের ব্যবসা করেন মোঃ ইকবার। তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিন যাবত শীত মৌসুমে এই রেল প্লাজায় শীতের জামাকাপড় বিক্রি করি। এখানে সাধারণ নিম্নবিত্ত ও স্বল্প আয়ের লোকজন আসে। আবার মধ্যবিত্ত লোকেরাও আসেন। এখানে পুরাতন কাপড়ের পাশাপাশি এক্সপোর্ট কোয়ালিটির নতুন কাপড় বিক্রি হয়ে থাকে। এখানে কমদামি কাপড়গুলো ৫০ থেকে ৩০০টাকার মধ্যে, মাঝারী ধরনের গুলো ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা আর কিছু দামী কাপড় ও কম্বল ১ হাজার বা তার বেশি বিক্রি হয়ে থাকে।
  আরেক ব্যবসায়ী মোতালেব মৃধা বলেন, কম টাকায় সাধ্যের মধ্যে শীতের কাপড় কিনতে এই রেল প্লাজায় অনেকেই আসে। একটু শীত বাড়ায় আমাদের বেচাবিক্রিও ভালো হচ্ছে। দৈনিক গড়ে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকার জামাকাপড় বিক্রি হয়। কোন কোন দিন ১০ হাজার টাকা পার হয়ে যায় বেচাবিক্রি।
 রেল প্লাজার মার্কেটে কথা হয় সেলিম শেখ নামের এক ব্যক্তির সাথে। পেশায় তিনি প্রাণ আরএফএল কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি। রেল প্লাজার একটি দোকানে তিনি শীতের জ্যাকেট দেখেছিলেন। এ সময় তিনি বলেন, আমি সামান্য টাকা বেতন পায়। দ্রব্যমূল্যের যে দাম সংসার চালাতেই হিমসিম খেতে হয়। এখানে(রেলপ্লাজায়) এসেছি কম দামের মধ্যে একটা শীতের জ্যাকেট কিনতে। শপিং মল থেকে নতুন জ্যাকেট কেনার সাধ থাকলেও সাধ্য নেই।তাই বাধ্য হয়ে এই পুরাতন মার্কেটে এসেছি। তবে এখানে সব আইটেম গুলো পুরাতন নয়। এখানে কম দামের মধ্যে এক্সপোর্ট কোয়ালিটির ভালো জ্যাকেট রয়েছে।
  ভ্যান চালক আসলাম মিয়া বলেন, কয়েকদিন ধরে ছেলে বায়না ধরেছিলো একটা ব্লেজার কিনে দেওয়ার জন্য। নতুন কাপড়ের মার্কেট থেকে কিনতে অনেক খরচ হবে তাই এতদিন দেওয়া হয়নি।রাজবাড়ী এসেছিলাম একটা ভাড়া নিয়ে।ফেরার পথে রেললাইনের ধারে কাপড়ের মার্কেট দেখে সেখানে যায়। দেখি সাধ্যের মধ্যে জামাকাপড় পাওয়া যাচ্ছে। তাই তিনশো টাকা দিয়ে ছেলের জন্য একটা ব্লেজার কিনেছি।
  রেলপ্লাজা মার্কেটে কাপড় সরবরাহকারী মোঃ শাওন শেখ বলেন, এই রেলপ্লাজার পুরাতন কাপড়ের মার্কেটটি নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের কাছে অনেক জনপ্রিয়। এই মার্কেটের নাম পুরাতন কাপড়ের মার্কেট হলেও এখানে এক্সপোর্ট কোয়ালিটির নতুন জামাকাপড় ও পাওয়া যায়। তবে পুরাতন বলতে এখানে কারও কোন ব্যবহিত জামাকাপড় নেই। এখানকার কাপড় গার্মেন্টসে গোডাউনে দীর্ঘ দিন পড়ে থাকা কাপড়। এছাড়া বিদেশি বায়ারদের থেকে রিজেক্ট হওয়া কাপড় বেশি।আমরা এই কাপড় গুলো কেজি দরে কিনে নিয়ে আসি।     

 

রাজবাড়ীতে মহিলা দলের নেত্রী বিউটি  ও টুকটুকিকে বহিষ্কার করলো বিএনপি
রাজবাড়ী সরকারী কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের পদযাত্রা-সমাবেশ অনুষ্ঠিত
রাজবাড়ী জেলা তথ্য অফিসের উদ্যোগে পাট্টা ইউনিয়নে মহিলা সমাবেশ অনুষ্ঠিত
সর্বশেষ সংবাদ