দেশের প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী এবং মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়েছে।
প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আজ শুক্রবার সকালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শুরু হয়।
রাজবাড়ীতে গতকাল ২৩শে জুন সকালে জেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়।
বিকালে রাজবাড়ী সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও রাজবাড়ী-২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জিল্লুল হাকিম বক্তব্য রাখেন।
এরপর সেখান থেকে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি রাজবাড়ীর প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে রেলগেটস্থ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি চত্ত্বরে এসে শেষ হয়।
পরে সেখানে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী, সহ-সভাপতি ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য সালমা চৌধুরী রুমা, সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য এডঃ খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন, সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ফকীর আব্দুল জব্বার, মুহাম্মদ আলী চৌধুরী, হেদায়েত আলী সোহরাব, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শেখ সোহেল রানা টিপু, জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক কাজী রাকিবুল হোসেন শান্তনু, রাজবাড়ী পৌরসভার মেয়র মোঃ আলমগীর শেখ তিতু, মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহিদা চৌধুরী তন্বী, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি এডঃ মোঃ উজির আলী শেখ, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান মিয়া সোহেল, জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি কানিজ ফাতেমা চৈতী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোঃ হাফিজুর রহমান হাফিজ, জেলা কৃষক লীগের আহ্বায়ক আবু বককার খান ও জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জাহিদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এ সময় জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জিল্লুল হাকিম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন নেতৃবৃন্দকে স্মরণ করে বলেন, আওয়ামী লীগ জন্মের পরে এদেশের মানুষের স্বাধীনতা ও মৌলিক অধিকার এনে দিয়েছে। বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশকে জাতির পিতার নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে। দেশ স্বাধীন হবার পর জাতির পিতা যখন বাংলাদেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন ঠিক তখনই ষড়যন্ত্রকারীরা ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট জাতির পিতাকে স্বপরিবারে হত্যার মাধ্যমে এদেশের উন্নয়ন বাঁধাগ্রস্ত করেছিল। এরপর দীর্ঘ সময় সেই ষড়যন্ত্রকারী দেশের ক্ষমতা দখল করে দেশের উন্নয়নের নামে শুধু লুটপাট করেছে ও নিজেরা বিপুল ধনসম্পদের মালিক হয়ে আয়েসী জীবন অতিবাহিত করেছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশে ফিরে আসার পর আওয়ামী লীগের হাল ধরেন ও ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে দেশের জনগণকে সাথে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার মাধ্যমে তাদের ক্ষমতাচ্যুত করে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। যার ফলে দেশে সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে তিনি ক্ষমতায় এসে এদেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়নসহ ভালোভাবে বাঁচার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছেন। শুধু সেটাই নয়, তিনি বর্তমানে বাংলাদেশকে এমন জায়গায় নিয়ে গেছেন যে বাংলাদেশকে বিশ্বের মানুষ এখন রোল মডেল দেশ হিসেবে চেনে। সেই উন্নয়নের ধারাকে অব্যহত রাখতে বিএনপি জামায়াতের সকল ধরনের ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে আবারও নৌকায় ভোট দিয়ে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আনতে হবে। আর সেই জন্য আওয়ামী লীগের সকল নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী বলেন, আওয়ামী লীগ বাঙালী জাতির মুক্তি সংগ্রাম ও স্বাধীনতা যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছে। আওয়ামী সরকারের আমলে যে উন্নয়ন হয়েছে বিগত কোনো সরকারের আমলে তা হয় নাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ১৪ বছর ৫ মাস ক্ষমতায় থেকে দেশকে উন্নয়নের শিখরের নিয়ে গেছেন। দেশ এখন এমন পর্যায়ে পৌছেছে পৃথিবীর মানুষ বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল রাষ্ট্র হিসেবে চেনে।
তিনি বলেন, যারা বর্তমানে আওয়ামী লীগ করেন তারা সকল বিভেদ ভুলে নিজেদের মধ্যে ঐক্য সৃষ্টির মাধ্যমে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করেন। আমি রাজবাড়ী বাজার ব্যবসায়ী ভাইদের বলতে চাই আমাদের যারা আওয়ামী লীগ করে তারা কোন চাঁদাবাজি করে না। বিএনপির সময়ে রাজবাড়ী বাজারে ব্যবসায়ীদের প্রতিনিয়তই চাঁদা দিয়ে ব্যবসা করতে হত। তাই রাজবাড়ীবাসীকে বলব আপনারা জেলার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে ও দেশের কল্যাণের কথা চিন্তা করে আগামী নির্বাচনে নৌকায় ভোট দিবেন। যাতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আবারও ক্ষমতায় এসে দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে বাংলাদেশকে একটি উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর করতে পারেন।