ঢাকা শনিবার, এপ্রিল ২৭, ২০২৪
শাশুড়ীকে জবাই করে হত্যা‍: পুত্রবধূসহ পরকীয়া প্রেমিকের যাবজ্জীবন
  • মীর সামসুজ্জামান সৌরভ
  • ২০২৪-০৩-২৮ ১৫:৪৮:৫১

রাজবাড়ীর সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মোসাম্মৎ জাকিয়া পারভিন গতকাল ২৮শে মার্চ আলোচিত সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নে বারবাকপুরে ঘুমন্ত অবস্থায় শ^াশুড়ী হাজেরা বেগম (৫০)কে গলাকেটে হত্যা মামলায় তার পুত্রবধূ স্বপ্না বেগম(২৯) ও তার পরকীয়া প্রেমিক মোঃ সোহেল মিয়া (৩৮)কে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ডের আদেশ প্রদান করেছেন।
 রায়ে এ মামলার অপর আসামী আলাদীপুর গ্রামের ইসমাইল শেখের ছেলে কবির শেখের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাকে খালাস প্রদান করা হয়েছে।
 দন্ডপ্রাপ্তরা হলো- রাজবাড়ী সদর উপজেলার বারবাকপুর গ্রামের নিহত হাজেরা বেগমের বড় ছেলে মোঃ হাফিজুল শেখের স্ত্রী স্বপ্না বেগম(২৯) ও স্বপ্না বেগমের পরকীয়া প্রেমিক কোমরপাড়া গ্রামের মোঃ হোসেন মিয়ার ছেলে মোঃ সোহেল মিয়া।
 আদালত সূত্রে জানা গেছে, নিহত হাজেরা বেগমের বড় ছেলে ও স্বপ্নার স্বামী মোঃ হাফিজুল শেখ বিদেশে থাকতো। হাফিজুলের স্ত্রী তার ছেলের জন্ম নিবন্ধন করার জন্য ইউনিয়ন অফিসে গিয়ে চেয়ারম্যানকে না পেয়ে ফিরে আসার সময় স্বপ্নার সাথে সোহেলের পরিচয় হয়। পরে সোহেল স্বপ্নার ছেলের জন্ম নিবন্ধন করে দেয়। এরপর থেকেই স্বপ্না ও সোহেলের মধ্যে পরকীয়া সম্পর্ক তৈরি হয়। তারা নিয়মিত ইমুতে ভিডিও কলে কথা বলতো। এর মধ্যেই সোহেল রাতে একদিন স্বপ্নার বাড়িতে যায় কিন্ত স্বপ্নার শাশুড়ী টের পেলে সে ফিরে আসে। এরপর ২০১৮ সালের ১৬ই আগস্ট রাতে স্বপ্না তার শিশু সন্তান নিয়ে শাশুড়ীর সাথে ঘুমিয়ে পড়ে। রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে সোহেল স্বপ্নার ঘরে প্রবেশ করে স্বপ্নার সাথে দৈহিক সম্পর্ক করার চেষ্টা করলে স্বপ্নার শাশুড়ী টের পেয়ে যায়। পরবর্তীতে সোহেল, কবির ও স্বপ্না ৩জন মিলে হাজেরা বেগমকে কুপিয়ে ও গলাকেটে হত্যা করে। এ ঘটনার পরদিন ২০১৮ সালের ১৭ই আগস্ট হাজেরা বেগমের স্বামী তমিজ উদ্দিন শেখ বাদী হয়ে রাজবাড়ী থানায় অজ্ঞাতনামা আসামী করে মামলা দায়ের করে। মামলা দায়ের পর ২০১৮ সালের ৭ই সেপ্টেম্বর ডিবির সদস্যরা সোহেলকে গ্রেফতার করে। পরে ১৫ই সেপ্টেম্বর  ডিবির একটি দল স্বপ্নাকে গ্রেফতার করে। ওইদিন তাকে আদালতে পাঠানো হলে সে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেয়। এছাড়াও কবির নামের একজনকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছিলো।
 এ বিষয়ে রাজবাড়ী আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর(পিপি) এডঃ মোঃ উজির আলী শেখ জানান, মামলাটি তদন্ত পূর্বক পুলিশ ৩জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। দীর্ঘ সাক্ষ্য প্রমাণ গ্রহণ শেষে আদালত দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় স্বপ্না বেগম ও তার পরকীয়া প্রেমিক সোহেল মিয়াকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ডের আদেশ প্রদান করে। রায়ে আলাদীপুর গ্রামের ইসমাইল শেখের ছেলে কবির শেখের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ এ রায়ে সন্তুষ্ট।

১২তম জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস কাল
রাজবাড়ী শহরের রেলওয়ে মাঠে জমে উঠেছে মাসব্যাপী শিল্প ও বাণিজ্য মেলা
বড় কাভার্ড ভ্যান চালকদের গলার কাঁটা নতুন ৬ ফেরী!