ঢাকা শুক্রবার, মে ৩, ২০২৪
রেলের ভাড়া বৃদ্ধি হয়নি,তবে ভর্তুকি প্রত্যাহার করা হয়েছে--রেলপথ মন্ত্রী জিল্লুল হাকিম এমপি
  • মীর সামসুজ্জামান সৌরভ
  • ২০২৪-০৪-২৩ ১৭:৩৯:৪৫

রেলপথ মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জিল্লুল হাকিম এমপি বলেছেন, সবাই মনে করছে রেলের ভাড়া বৃদ্ধি হয়েছে, কিন্তু না রেলের ভাড়া বৃদ্ধি হয়নি, ভর্তুকি প্রত্যাহার করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে কিছুটা ভাড়া বাড়বে, তবে সব ক্ষেত্রে না। ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে আমাদের ভাড়া বাড়ছে না। যত দূরত্ব বাড়বে সেক্ষেত্রে কিছু কিছু ভাড়া বাড়বে।
 গতকাল ২৩শে এপ্রিল সন্ধ্যায় রাজবাড়ী শহরের শহীদ খুশি রেলওয়ে মাঠে ৬ষ্ঠ তম শিল্প ও বাণিজ্য মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
 রেলপথ মন্ত্রী জিল্লুল হাকিম বলেন, বিএনপির আমলে রেলপ্রায় ধ্বংসের মুখে পড়েছিলো। ফরিদপুরের রেললাইন তুলে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল, ভাটিপাড়ার রেললাইন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। রেল থেকে গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের নামে শ্রমিকদের ছাঁটাই করে দেওয়া হয়েছিল। এই অবস্থা যখন চলছিলো রেলে যখন মানুষ চড়তে চাইতো না। সেই সময় একটা ভর্তুকির ব্যবস্থা করা হয়েছিলো যাতে রেলে যাত্রী পাওয়া যায়। এখন রেলের সেই অবস্থা নেই, রেলে অনেক উন্নতি হয়েছে। আজকে ট্রেনে রাজবাড়ী থেকে ঢাকায় ২ ঘন্টা ৩০ মিনিটে যাওয়া যায়। আমি নিজেও ট্রেনে ঢাকা থেকে রাজবাড়ী এসেছি। যাত্রীদের সাথে কথা বলেছি তারা বর্তমানে ট্রেনের সার্ভিস নিয়ে আনন্দিত ও সন্তুষ্ট। এবার ঈদযাত্রায় বাংলাদেশ রেলওয়ে যে সার্ভিস দিয়েছে মানুষ এতে সন্তুষ্ট। এবার ট্রেনে শিডিউল বিপর্যয় ছিলো না, টিকিট কালোবাজারি ছিলো না, যাত্রীরা এবার ভালোভাবেই যেতে পেরেছে। এই প্রথম যাত্রীরা রেলে আনন্দের সাথে ঈদযাত্রা করতে পেরেছে।
 রেলপথ মন্ত্রী বলেন, আমরা রেলকে উন্নত করতে চাই। আপনারা জানেন যে রেলে ভাড়া বাড়ানোর কথা হয়েছিল। রেলে ভাড়া বাড়ানো হয় না প্রায় ২০ বছর। সব জিনিসের দাম বাড়ছে। বাসের ভাড়া বেড়েছে কিন্তু রেলের ভাড়া বৃদ্ধি করা হয় নাই, শুধুমাত্র ভর্তুকি প্রত্যাহার করা হয়েছে। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন এখন ভাড়া বাড়ানো যাবে না, তবে ভর্তুকি প্রত্যাহার করতে পারো, এটাতে খুব একটা প্রভাব পড়বে না। আমরা আশাকরি এইটুকু আপনারা মেনে নিবেন।
 তিনি আরো বলেন, আমি রেলপথ মন্ত্রী হিসেবে আপনাদের সহযোগিতা নিয়ে রেলকে একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিণত করতে চাই। আমরা রেকে কন্টেইনার সার্ভিস চালু করবো। এটা চালু হলে রেল লাভজনক হবে।
 মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের রেলের জায়গার ওপর প্রচুর দোকানপাট রয়েছে, যার কোন হিসেব নেই। এইগুলোকে আমরা দ্রুত খুঁজে বের করছি। আমরা একটা তালিকা করবো। তালিকা করে তাদের সাথে বসে ভাড়া আদায় করবো। যারা ভাড়া দিবে না তারা রেলের জায়গার ওপর দোকানপাট করতে পারবে না। আমি মনে করি এই রেলের জায়গার ওপর যাদের দোকানপাট রয়েছে তাদের থেকে ভাড় আদায় করলে বাংলাদেশের মধ্যে রেলের কর্মচারীদের বেতনের জন্য রাজস্ব থেকে টাকা নিতে হবে না। এই টাকা দিয়েই আমরা সমস্ত কর্মচারীদের বেতনভাতা পরিশোধ করতে পারবো।
 রেলমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জিল্লুল হাকিম বলেন, আপনারা জানেন রাজবাড়ীতে বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় রেল কারখানা হবে ১০৫ একর জমির ওপর।এই কারখানা হলে রাজবাড়ীর প্রায় ৫হাজার শ্রমিকদের কর্মসংস্থান হবে। এই কাজ খুব দ্রুত শুরু হবে। এছাড়াও রাজবাড়ীতে একটি আধুনিক অডিটোরিয়াম হবে যেটার নকশা তৈরি হয়ে গেছে। এছাড়াও রাজবাড়ীতে রেলের ডিভিশন করা হবে। এর মধ্যে দিয়ে রাজবাড়ী জেলা আবার রেলের শহরে পরিণত হবে। এতে রাজবাড়ীর সৌন্দর্য ও রাজবাড়ীর মানুষের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি হবে।
 মন্ত্রী বলেন, আজকে রাজবাড়ীতে যে শিল্প মেলা হচ্ছে আমরা সবাই চাই আমাদের উৎপাদিত পন্য এখানে প্রদর্শিত হোক। যারা কুটির শিল্প তৈরি করে, বস্ত্র তৈরি করেন অন্যান্য জিনিসপত্র তৈরি করেন মেলায় এগুলো প্রদর্শনের মাধ্যমে তাদের উৎপাদিত পন্য সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। সবাই সহযোগীতা করবেন। আমি মেলার সফলতা কামনা করি।
 এ সময় রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব কাজী কেরামত আলী বলেন, আমাদের শহীদ খুশি রেলওয়ে মাঠে দীর্ঘদিন পর শিল্প ও বাণিজ্য মেলা হচ্ছে। আমাদের রাজবাড়ীতে বিনোদনের তেমন কোন ব্যবস্থা নেই। করোনা কালীন সময়ে রাজবাড়ীতে তেমন কিছু হয়নি। আমরা মেলায় কোন বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করবো না। মেলায় মানুষ আসে আনন্দের জন্য বিনোদনের জন্য। আমাদের দেয় আরও এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা বিভিন্ন জিনিস বাংলাদেশ রপ্তানি করছি। আমাদের দেশেই এখন সবকিছু তৈরি হচ্ছে। আগে আমরা ইন্ডিয়াতে গেলেই প্রথমে বেডশিট কিনতাম। কিন্তু এখন আমরা ইন্ডিয়াতে গেলে বেডশিট কিনতে হয় না। কারণ বাংলাদেশেই এখন উন্নতমানের বেডশিট তৈরি হয় এবং দামে অনেক সস্তা। বাংলাদেশ এখন সবদিক দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে কাজ গুলো করে যাচ্ছেন সেই দিক থেকে আমরা অনেক এগিয়ে গেছি। এই মেলার মাধ্যমে দেশিয় পন্য যাতে সবার কাছে ছড়িয়ে যায় সেই চেষ্টা করতে হবে। এজন্য আপনারা সবাই মেলায় আসবেন।
 রাজবাড়ী জেলা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইরাদত আলীর সভাপতিত্বে মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম শফিকুল মোরশেদ আরুজ, পুলিশ সুপার জিএম আবুল কালাম আজাদ পিপিএম(সেবা) ও রাজবাড়ী পৌরসভার মেয়র মোঃ আলমগীর শেখ তিতু সহ প্রমুখ।

রাজবাড়ীর ২নং রেলগেট এলাকায় লাইনচ্যুত মালবাহী ট্রেন  উদ্ধার॥চলাচল স্বাভাবিক
তীব্র দাবদাহে রাজবাড়ীতে পথচারীদের পানি ও খাবার স্যালাইন দিল এসএমসি
রাজবাড়ী-গোয়ালন্দ ও বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ
সর্বশেষ সংবাদ