ঢাকা বুধবার, জুন ১৮, ২০২৫
রাজবাড়ী জেলা সদর হাসপাতালে শয্যার চেয়ে দ্বিগুণ রোগী ভর্তি থাকায় ভোগান্তি
  • মীর সামসুজ্জামান
  • ২০২৪-১০-২৬ ১৫:৩৬:১১

রাজবাড়ীতে শীত শুরুর আগেই ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। জ্বর, সর্দি, কাঁশি, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে প্রতিদিন জেলা সদর হাসপাতালে রোগী ভর্তি হচ্ছে।
 হঠাৎ করে রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালে শয্যা সংকট দেখা দিয়েছে। ১০০ শয্যা বিশিষ্ট রাজবাড়ী জেলা সদর হাসপাতালে বর্তমানে রোগীর সংখ্যা এখন দ্বিগুণের বেশি। এর মধ্যে অধিকাংশই শিশু ও বয়স্ক রোগী। এ অবস্থায় রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। হাসপাতালে শয্যা কম থাকায় রোগীদের পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তি। হাসপাতালে বর্তমান শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা বেশি। 
 গতকাল ২৬শে অক্টোবর দুপুরে রাজবাড়ী আধুনিকৃত সদর হাসপাতালে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।
 সরেজমিনে দেখা যায়, প্রত্যেকটি ওয়ার্ডেই ভর্তি রোগীর চাপ বেশি। বেডের পাশাপাশি রোগীদের ফ্লোরে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ডায়রিয়া, সার্জারী, শিশু, গাইনী ও মেডিসিন ওয়ার্ডে বরাদ্দকৃত বেডের চেয়ে অতিরিক্ত রোগী ভর্তি রয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে ডেঙ্গু রোগীও। 
 অপরদিকে বহিঃবিভাগেও রয়েছে রোগীর বাড়তি চাপ। ঠান্ডা, কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা নিতে রোগীরা এসেছে। রোগীর চাপ থাকায় ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে তাদের চিকিৎসা সেবা নিতে হচ্ছে।
 জানা গেছে, রাজবাড়ী জেলার সকল উপজেলার গরীব ও অসহায় মানুষ উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রতিদিনই ভিড় করে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট রাজবাড়ী জেলা সদর হাসপাতালে। সারাদেশের মতো রাজবাড়ীতেও বাড়ছে ডেঙ্গু, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, জ্বর, ঠাণ্ডাসহ রোগীর সংখ্যা। ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটিতে আবার রয়েছে জনবল সংকট। প্রতিদিনই ধারণ ক্ষমতার দ্বিগুণেরও বেশি রোগীর চাপ থাকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীদের ওষুধসহ চিকিৎসার বিভিন্ন উপকরণ দিতে হিমশিম খাচ্ছে। 
 রাজবাড়ী জেলা সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত ২৫শে অক্টোবর সদর হাসপাতালে ১০০ শয্যার বিপরীতে ২৪৯ জন রোগী ভর্তি ছিল। এর মধ্যে জেনারেল ওয়ার্ডে ২৩৮ জন ও কেবিনে ১১ জন। ২৪৯ জন ভর্তি রোগীর মধ্যে পুরুষ সার্জারী ওয়ার্ডে ৩১ জন, মহিলা সার্জারী ওয়ার্ডে ২৮ জন, পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে ৪২ জন, মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে ৪৯জন, শিশু ওয়ার্ডে ৪৪ জন, গাইনী ওয়ার্ডে ৩৩ জন ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ২২ জন রোগী ভর্তি রয়েছে।
 তিন বছরের বাচ্চাকে নিয়ে শিশু ওয়ার্ডে আছেন মা ফাহিমা। তিনি বলেন, দু’দিন ধরে তিন বছরের শিশু নিয়ে ভর্তি আছি। হাসপাতালে অনেক রোগী কোনোমতে ঠাঁসাঠাসি করে ভর্তি রয়েছি। অনেক সমস্যা হচ্ছে আমাদের।
 হাসপাতালে পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা রোগী আবদাল আহমেদ বলেন, গত ৩/৪ দিন যাবত জ্বর, ঠান্ডা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। রোগীর এত চাপ যা বলার বাইরে। চিকিৎসক ও নার্সরাও সেবা দিতে হিমসিম খাচ্ছে।
 বর্হিঃবিভাগে গাইনী ডাক্তার দেখাতে আসা ইসমত আরা বলেন, সকাল ৯টায় ডাক্তারের রুমের সামনে এসে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। এখনো আমি ২৫/৩০ জনের পরে। কখন ডাক্তার দেখাতে পারবো বলতে পারছিনা।
 রাজবাড়ী জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ এস এম এ হান্নান বলেন, আমাদের হাসপাতাল বর্তমানে ১০০ শয্যার হাসপাতাল। আমাদের ২৫০ শয্যার হাসপাতালের কাজ শেষের দিকে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নবনির্মিত ২৫০ শয্যার হাসপাতালটি চালু করা হলে রোগীরা শয্যা সংকট দূর হওয়া সেবার মান বৃদ্ধি পাবে।    
 তিনি আরো বলেন, বর্তমানে ১০০ শয্যার হাসপাতালে গড়ে ২৬০ জন রোগী ভর্তি থাকে। গত ২৫শে অক্টোবরে হাসপাতালে ২৪৯ জন রোগী ভর্তি ছিল। গড়ে প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ জন রোগী ভর্তি হয় এবং ৪০ থেকে ৫০ জন রোগী ছাড়পত্র নিয়ে চলে যায়। ১০০ শয্যার হাসপাতালে ২০০/২৫০ জন রোগী চিকিৎসা দিতে খুবই কষ্ট হয়। জনবল কম থাকার কারণে এবং রোগীদের লজিস্টিকস সাপোর্ট কম থাকার কারণে একটু সমস্যা হয়। ১০০ শয্যা হাসপাতাল হলেও ১৫০টি বেড রয়েছে। সব রোগীকে আমরা বেড দিতে পারিনা। অনেক রোগী এসে ফ্লোরে থাকে। তবে ফ্লোরে থাকলেও তাদের যত্নের কোন কমতি নেই। ফ্লোর নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়। বেডের ফোম পরিবর্তন করা হয়। তারপরও আমরা সর্বোচ্চ সেবাটা রোগীদের দিয়ে থাকি।

 

রাজবাড়ীর পদ্মা নদীর পাড়ে বর্ষা উৎসব আগামী ২০ জুন
বিএনপিকে ক্ষমতায় আনতে হলে বিভেদ ভুলে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে--খৈয়ম
চন্দনীতে ডাকাতির ঘটনায় জড়িত ডাকাত দলের ৫ সদস্য গ্রেফতার
সর্বশেষ সংবাদ