“গন্ধে উদাস হাওয়ার মতো উড়ে তোমার উত্তরী কর্ণে তোমার কৃষ্ণচূড়ার মঞ্জরি” কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতো অনেকেই বাংলা কবিতা-গানে উপমা হিসেবে নানা ভঙ্গিমায় এনেছেন কৃষ্ণচূড়াকে। আর গীতিকার কবি বকুলের জনপ্রিয় গানেই ফুটে উঠেছে কৃষ্ণচূড়ার প্রতি আবেগঘন ভালোবাসা ও তার রূপ দর্শনে প্রতীক্ষার কাঙ্খিত বাস্তব চিত্র।

  শোভা বর্ধনকারী এ বৃক্ষটি গ্রামীণ জনপদের পাশাপাশি শহরের পথে-প্রান্তরেরও শোভা বর্ধন করে যাচ্ছে। গ্রীষ্মে যখন এ ফুল ফোটে তখন প্রকৃতি প্রেমীদের হাতছানি দেয়। কৃষ্ণচূড়ার এ অপরূপ রূপে মোহিত হয়ে উঠছে ভাবুক মন।

  চোখ ধাঁধানো টুকটুকে লাল কৃষ্ণচূড়া ফুলে সেজেছে গোয়ালন্দ উপজেলার গ্রীষ্মের প্রকৃতি। দৌলতদিয়া বাইপাস সড়কের দু’পাশ দিয়ে ছেড়ে গেছে অপরূপ সৌন্দর্যে। দেখেই মন জুড়িয়ে যায়। সাধারণত এই সময়টায় পথে-প্রান্তরে এখন ফুটছে কৃষ্ণচূড়া। দূর থেকে দেখলে মনে হয়, বৈশাখের রৈদ্দুরের সবটুকু উত্তাপ গায়ে মেখে নিয়েছে রক্তিম পুষ্পরাজি; সবুজ চিরল পাতার মাঝে যেন আগুন জ্বলছে। গ্রীষ্মের ঘাম ঝরা দুপুরে কৃষ্ণচূড়ার ছায়া যেন প্রশান্তি এনে দেয় অবসন্ন পথিকের মনে। তাপদাহে ওষ্ঠাগত পথচারীরা পুলকিত নয়নে, অবাক বিষ্ময়ে উপভোগ করেন এই সৌন্দর্য্য।

  গতকাল ২৪শে এপ্রিল দুপুরে সরেজমিনে গোয়ালন্দ উপজেলার স্টেশন রোড, তোরাই মোড়, বাজার রোড, দৌলতদিয়া বাইপাস সড়কসহ বিভিন্ন অঞ্চাল ঘুড়ে দেখা যায়, বৈশাখে কৃষ্ণচূড়া তার লাল আবীর নিয়ে পাকা রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে। দেখে মনে হচ্ছে কৃষ্ণচূড়া তার সমস্ত রঙ প্রকৃতির মাঝে ছড়িয়ে দিয়েছে। এই কৃষ্ণচূড়া গাছটির দিকে তাকালেই তার মুগ্ধতায় যে কারোরেই দৃষ্টি কেড়ে নেয়।

  গোয়ালন্দ উপজেলা বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কৃষ্ণচূড়ার আদি নিবাস পূর্ব আফ্রিকার মাদাগাস্কার। এই বৃক্ষ শুষ্ক ও লবণাক্ত অবস্থা সহ্য করতে পারে। ক্যারাবিয়ান অঞ্চল, আফ্রিকা, হংকং, তাইওয়ান, দক্ষিণ চীন, বাংলাদেশ, ভারতসহ বিশ্বের অনেক দেশে এটি জন্মে থাকে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণচূড়া শুধুমাত্র দক্ষিণ ফ্লোরিডা, দক্ষিণ পশ্চিম ফ্লোরিডা, টেক্সাসের রিও গ্রান্ড উপত্যকায় পাওয়া যায়।

  কৃষ্ণচূড়া গ্রীষ্মের অতি জনপ্রিয় ও পরিচিত ফুল। গোয়ালন্দ উপজেলার, রেলস্টেশন, গরুহাট, বাসস্ট্যান্ড, দৌলতদিয়ার বাইপাস সড়কসহ বিভিন্ন পয়েন্টেসহ প্রত্যন্ত গ্রাম-গঞ্জে কৃষ্ণচূড়ার শাখায় শাখায় এখন লালে লাল হয়ে ফুটে আছে এই ফুল।