রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া এক সময়ের খরস্রোতা নদী চন্দনা এখন দখলে-দূষণে মৃতপ্রায়। হঠাৎ দেখলে মনে হবে নদী তো নয় যেন ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়! 

  অথচ এই চন্দনা নদীর একসময় ভরা যৌবন ছিল। উত্তাল ঢেউ ছিল। নদীতে বয়ে যেত ছোট-বড় নৌকা, লঞ্চ। এখন আর সেই অপূর্ব দৃশ্য নেই। এখন চন্দনা নদী ময়লা-আবর্জনায় ভরে গেছে। ছোটবেলায় অনেকেই এই নদীতে সাঁতার কেটেছে। জেলেরা মাছ শিকার করে জীবন নির্বাহ করেছে। কালের আবর্তে সেসব এখন শুধুই স্মৃতি। 

  এলাকার প্রবীণ কৃষকরা বলেন, আগে আমরা নদীতে দলবল নিয়ে বড়-বড় আইড়, বাইম মাছ ধরতাম। নদীতে নৌকা বোঝাই করে ধান ও পাট নিয়ে বিক্রি করতাম হাট-বাজারে। এখন এই নদী মরার পথে। শুধু এই কৃষকরাই নন, চন্দনা নদীর মরণদশা নিয়ে এমন আক্ষেপ নদীর দুই পাড়ের অনেক কৃষকের মুখেই শোনা যায়। তাদের অভিযোগ, বর্তমানে নদীতে প্রায় সারা বছরই পানি শূন্য থাকে। ফলে বিপাকে পড়তে হচ্ছে কৃষকদের। কারণ এই নদীর পানি দিয়েই তারা জমিতে সেচ দিত। এখন নদীতে পানি না থাকায় বিকল্প ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। ফলে আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে কৃষকদের।

  ৭৫ বছর বয়সী বৃদ্ধ বকুল খাঁ বলেন, এই চন্দনা নদীর উপর নির্ভর করে একসময় ফসল ফলাতো এলাকার কৃষকরা। উৎপাদিত ফসলও নৌকায় করে বিভিন্ন হাট-বাজারে নিয়ে যাওয়া হতো। আজ সেসব স্মৃতি। বর্তমান প্রজন্মের কাছে এই নদীটি এখন শুধুই ইতিহাস। তারা বিশ্বাসই করতে চায় না এই নদীতে একসময় নৌযান চলতো।

  কৃষক জাহাঙ্গীর উদ্দিন বলেন, পানি শূন্যতায় নদীটি মরে যাচ্ছে। নদীটি শুকিয়ে যাওয়ায় এ এলাকার সাধারণ মানুষের অনেক ক্ষতি হচ্ছে। পানির অভাবে কৃষকরা ফসল ফলাতে পারছেন না। নদীতে পানি না থাকায় জেলেরাও বেকার।