প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল ১৭ই এপ্রিল চতুর্থ ধাপে দেশের আরো ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন করেছেন। 
  এরমধ্যে রাজবাড়ী জেলার কালুখালী উপজেলা মডেল মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রটিও উদ্বোধন করা হয়।
  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সরকারী বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন করেন। 
  নতুন এসব মসজিদসহ প্রধানমন্ত্রী দেশজুড়ে ৯ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য ৫৬৪টির মধ্যে এ পর্যন্ত ২০০টি মসজিদ উদ্বোধন করেন। 
  এর আগে তিনি প্রথম দফায় ২০২১ সালের ১০ই জুন ৫০টি মসজিদ, চলতি বছরের ১৬ই জানুয়ারী দ্বিতীয় দফায় আরো ৫০টি এবং তৃতীয় দফায় ১৬ই মার্চ আরো ৫০টি মসজিদ উদ্বোধন করেন।
  অবশিষ্ট মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ ২০২৪ সালের জুন নাগাদ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। 
  অনুষ্ঠানে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মোঃ ফরিদুল হক খান ও মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী এনামুল হাসান বক্তব্য রাখেন। প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব মোঃ তোফাজ্জল হোসেন মিয়া অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
  রাজবাড়ী জেলার কালুখালী উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের মিলনায়তনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খান, পুলিশ সুপার এম এম শাকিলুজ্জামান, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, কালুখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ্ মোঃ সজীব, কালুখালী থানা অফিসার ইনচার্জ নাজমুল হাসান, উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান শেখ মোঃ এনায়েত হোসেন, বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, জেলা পরিষদ সদস্য, উপজেলা পর্যায়ের সরকারী কর্মকর্তাগণ, শিক্ষকমন্ডলী, আলেম ও ইমামগণ, বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, শিক্ষার্থী, স্কাউটস সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
  উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া উপজেলা ও সিলেট জেলার বিশ^নাথ উপজেলাকে অনুষ্ঠানে যুক্ত করা হয় এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সরকারী কর্মকর্তা, আলেম-উলামাসহ সাধারণ মানুষ এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন।
  অনুষ্ঠানে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ওপর একটি ভিডিও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। 
  এসব মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রসমূহে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাসহ ওজু ও নামাজের আলাদা জায়গা রয়েছে। 
  এছাড়া হজযাত্রীদের জন্যে রেজিস্ট্রেশন ও প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা, ইমাম প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, গবেষণা কেন্দ্র ও ইসলামিক লাইব্রেরী, অটিজম কর্ণার, দাফন পূর্ব আনুষ্ঠানিকতা, গাড়ি পার্কিং সুবিধা, হিফজখানা, প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা ও কোরআন শিক্ষা ব্যবস্থা, ইসলামিক সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড ও ইসলামের দাওয়াতের জন্যে সম্মেলন কেন্দ্র, ইসলামি বই বিক্রয় কেন্দ্র, মসজিদসহ দেশি-বিদেশী অতিথিদের জন্যে থাকার সুবিধা থাকবে। 
  ইসলামের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এবং দেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে শেখ হাসিনা দেশে ৫৬৪টি মডেল মসজিদ স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। 
  প্রকল্পের উদ্দেশ্য হল ইসলামী ভ্রাতৃত্ব ও এর মূল্যবোধ এবং সেইসাথে চরমপন্থা ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ইসলামের সারমর্ম প্রচার করা, কারণ ধর্ম কখনই এগুলোকে সমর্থন করে না।
  এছাড়া এটি সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড প্রচারের পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদ ও নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টিতেও মনোনিবেশ ঘটাবে। 
  ক্যাটাগরি এ এর আওতায় ৬৪টি জেলা ও সিটি কর্পোরেশন এলাকায় এলিভেটর সুবিধা ও ২,৩৬০.০৯ বর্গ মিটার ফ্লোর স্পেসহ ৬৯টি চারতলা মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে। 
  ক্যাটাগরি বি এর আওতায় প্রতিটির ১৬৮০.১৪ বর্গ মিটার ফ্লোরস্পেসহ ৪৭৫টি মসজিদ এবং ক্যাটাগির সি এর আওতায় উপকূলীয় এলাকায় প্রতিটির ২,০৫২.১২ বর্গ মিটার ফ্লোর স্পেসসহ ১৬টি মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে।