নিজের অফিসে দৃষ্টিনন্দন ছাদ বাগান করে তাক লাগিয়ে দেওয়া রাজবাড়ীর কৃতি সন্তান ও ঢাকা মহানগর পুলিশের(ডিএমপির) যুগ্ম কমিশনার হামিদা পারভীন পাচ্ছেন বৃক্ষ রোপনে জাতীয় পুরস্কার। 

  আজ ৫ই জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে এই পুরস্কার গ্রহণ করবেন তিনি।

  হামিদা পারভীন বর্তমানে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপির) যুগ্ম কমিশনার, প্রোটেকশন অ্যান্ড ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটির দায়িত্ব পালন করছেন। এই পদে পদায়নের আগে(২০১৯-২০২২ পর্যন্ত) তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগে দায়িত্ব পালন। সেখানেই তিনি দৃষ্টিনন্দন ছাদ বাগান তৈরি করেন।

  ঢাকা মহানগর পুলিশের ‘উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন’ কার্যালয়ের ছাদে বাগান করার প্রেক্ষিতে তিনি বৃক্ষ রোপণে জাতীয় পুরস্কার পাচ্ছেন পুলিশের এই উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা।

  জানা যায়, হামিদা পারভীন সাড়ে ৭ হাজার বর্গফুটের অফিস ভবনের প্রায় ৫ হাজার বর্গফুটের ছাদে ১ হাজার ২০টি বিভিন্ন আকারের টব এবং ড্রাম দিয়ে বাগান তৈরি করেন। তিনি সেখানে ৪৮ প্রজাতির ফলজ, ৩০ প্রজাতির ভেষজ, ১২ প্রজাতির বনজ, ২১ প্রজাতির সবজি, ৭৭ প্রজাতির শোভাবর্ধনকারী, ১২ প্রজাতির বিরল ও বিভিন্ন মসলা গাছ লাগিয়েছেন। 

  নিজে ছাদ বাগান করার পাশাপাশি তিনি সবাইকে বাগান করতে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে তার ছাদ বাগান সবার পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত রেখেছিলেন।

  হামিদা পারভীন বিভিন্ন সামাজিক কাজেও নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছেন। অসহায় মানুষের পাশে সহযোগিতার হাত বাড়ানোর লক্ষ্যে রাজবাড়ীর সবচেয়ে জনপ্রিয় মানবিক সংগঠন “রাজবাড়ী হেল্পলাইন ফাউন্ডেশন” এর সাথে যুক্ত রয়েছেন। এই সংগঠনে তিনি উপদেষ্টা হিসেবে রয়েছেন। 

  হামিদা পারভীন দরিদ্রদের পাশে দাঁড়ানোর পাশাপাশি তিনি ভূমিহীন পরিবারের শিশুদের মধ্যে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গ্রন্থাগারে বই উপহার, অর্থের অভাবে মেডিকেল অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে না পারা মেধাবী শিক্ষার্থীর আর্থিক সহযোগিতা করায় এলাকায় ব্যাপক প্রশংসা রয়েছে তার।

  সামাজিক দায়িত্বের পাশাপাশি তিনি তার কর্মক্ষেত্রেও সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। হামিদা পারভীন ২০১৯ সালে উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের উপ-পুলিশ কমিশনারের দায়িত্ব নিয়েই এ বিভাগে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার, তদন্ত ইউনিট এবং কুইক রেসপন্স টিমের কার্যক্রমে আধুনিক ও মানবিক পুলিশিং শুরু করেন। 

  তিনি স্কুল-কলেজ ও গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন পরিচালনার মাধ্যমে সাইবার ক্রাইম, মাদক, বাল্যবিবাহ, যৌন হয়রানি এবং নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলেন।

  পুলিশের উচ্চ পদস্থ একজন নারী কর্মকর্তা হয়েও বৃক্ষ রোপনে তার এ জাতীয় পুরস্কার রাজবাড়ীতো বটেই পুরো দেশেই অনন্য এক দৃষ্টান্ত স্থাপন হয়ে থাকবে বলে মনে করছেন পরিবেশ প্রেমীরা।