রাজবাড়ী সদর উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের শাইলকাঠি গ্রামে একটি পুকুর থেকে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে মাটিকাটা বন্ধ করতে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করেছে ওই এলাকার আশরাফুল আলম নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি।
গত ২৩শে মার্চ আশরাফুল আলম সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরে উপজেলা প্রশাসন থেকে কর্মকর্তারা গিয়ে মাটিকাটা বন্ধ করে দেয়। কিন্তু পুনরায় আবার ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটা শুরু করলে দ্বিতীয় দফায় গত ২৮শে এপ্রিল তিনি ইউএনও বরাবর আরও একটি অভিযোগ দেন।
আবেদনে মোঃ আশরাফুল আলম উল্লেখ করে বলেন, আমি রাজবাড়ী সদর উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের শাইলকাঠি গ্রামের একজন স্থায়ী বাসিন্দা। আমার বাড়ী সংলগ্ন আক্তার হোসেন তার পুকুর থেকে মাটি কেটে বিক্রি করছে। আমার বাড়ীসহ ওই পুকুরের চার পাশেই বাড়ী অবস্থিত। আমার বিল্ডিং থেকে খনন কার্য ২০-২৫ ফিট দুরে সংগঠিত হচ্ছে এবং পাশের মাটি যেভাবে ভেঙ্গে যাচ্ছে তাতে আমার ভবন এবং পার্শ্ববর্তী পাকা রাস্তা যা শ্যামনগর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের যাওয়ার রাস্তা তা ভেঙ্গে যাবার উপক্রম হয়েছে। যদি বড় ধরনের বৃষ্টি হয় তাহলে আমার ভবন ও পাশের রাস্তা থাকবে না।
এ বিষয়ে ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ আশরাফুল আলম বলেন, পুকুর থেকে ড্রেজার দিয়ে মাটি ও বালি কাটা সম্পূর্ণ অবৈধ। আমার এলাকার আক্তার হোসেন অবৈধভাবে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে দিনেদুপুরে তার পুকুর থেকে মাটি কেটে ট্রাকে করে বিক্রি করছে। ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটার ফলে পুকুর পাড়ে অবস্থিত বাসাবাড়ী ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে। যে কোন সময় বড় ধরণের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। আমার নিজের বসতবাড়ীও ঝুঁকিতে রয়েছে। এছাড়াও পাশের একটি রাস্তা ঝুঁকিতে রয়েছে। আমরা এলাকাবাসী তাকে কয়েকবার বলেছি ড্রেজার দিয়ে মাটি না কাটতে। কিন্তু সে আমাদের কথার কোন কর্ণপাত না করেই প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে দেদারসে মাটি কেটে বিক্রি করছে।
সুলতানপুর ইউনিয়নের শাইলকাঠি গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, আক্তার হোসেন তার প্রভাব খাটিয়ে প্রশাসনকে তোয়াক্কা না করে অবাধে ড্রেজার দিয়ে পুকুর থেকে মাটি/বালি কাটছে। আমরা এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে তাকে কয়েকবার মাটি কাটতে বারণ করলেও সে আমাদের কথা না শুনে ড্রেজার দিয়ে মাটি/বালি কাটা চলমান রেখেছে। ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটার ফলে পুকুরের পার ভেঙ্গে যাচ্ছে। এতে পুকুরের আশেপাশে থাকা বসতবাড়ী গুলো ঝুঁকিতে রয়েছে। এছাড়া পুকুরের পাশ দিয়ে যাওয়া একটি রাস্তাও ঝুঁকিতে। যে কোন মুহুর্তে বৃষ্টি হলে যে কোন একটি অঘটন ঘটে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তাই আমরা বাধ্য হয়ে কোন কুল-কিনারা না পেয়ে প্রশাসনের কাছে দারস্থ হয়েছি। ইউএনওর কাছে আমরা লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমরা অবিলম্বে এই ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটা বন্ধ চাই। আমরা প্রশাসনের কাছে এর প্রতিকার চাই।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মারিয়া হক বলেন, এলাকাবাসীর দেওয়া একটি লিখিত অভিযোগ আমরা পেয়েছি। এ বিষয়ে তদন্ত করে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।