‘শিক্ষা ধর্ম নৈতিকতা, মশিগশি প্রকল্পের সারকথা’-এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রাজবাড়ীতে “টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জন এবং নৈতিক শিক্ষার প্রসারে মন্দির ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্পের ভূমিকা” শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল ২৯শে মে সকাল ১০টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমীর মিলনায়তনে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের মন্দির ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম-৬ষ্ঠ পর্যায়ের আয়োজনে এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানের শুরুতে মন্দির ভিত্তিক গণশিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে ভিডিও প্রদর্শন করা হয়।
মন্দির ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম-৬ষ্ঠ পর্যায়ের সহকারী প্রকল্প পরিচালক লিটন শিকদারের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে জেলা প্রশাসক সুলতানা আক্তার বক্তব্য রাখেন।
চায়না রানী সাহার সঞ্চালনায় কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বোয়ালমারী সরকারী কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর শংকর চন্দ্র সিনহা, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ তবিবুর রহমান, রাজবাড়ী প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী আব্দুল কুদ্দুস বাবু ও বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্ট রাজবাড়ী জেলা শাখার আহ্বায়ক অশোক কুমার সরকার বক্তব্য রাখেন।
কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন মন্দির ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী প্রকল্প পরিচালক(প্রশাসন, অর্থ ও সেবা) মোঃ জাহিদুল হাসান এবং শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন পাংশা বৈরাগী পাড়া নবারণ সংঘ পূজা মন্দিরের শিক্ষক বন্দনা অধিকারী, রাধা গোবিন্দ মন্দিরের অভিভাবক বিকাশ কুমার সরকার ও বিনোদপুর রাধা কৃষ্ণ মন্দিরের সভাপতি বাসুদেব মন্ডল।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক সুলতানা আক্তার বলেন, মন্দির ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্পটি শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষায় অন্তর্ভুক্তি, নৈতিক মূল্যবোধ জাগ্রতকরণ ও ধর্মীয় সহিষ্ণুতার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর শিশুদের শিক্ষার মূলধারায় যুক্ত করা সম্ভব হচ্ছে। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট(এসডিজি) অর্জনে এমন প্রকল্পসমূহ কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। বিশেষ করে গ্রামীণ ও প্রান্তিক অঞ্চলে শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে মন্দিরভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম একটি কার্যকর মাধ্যম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।
এ সময় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার মোঃ আশিকুজ্জামান, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক এস এম হাফিজুর রহমান, জেলা পুলিশের পরিদর্শক(ক্রাইম) আবু জিন্নাহ, জেলা বারের সিনিয়র আইনজীবী স্বপন কুমার সোম, জেলা কালচারাল অফিসার আল মামুন বিন সালেহ, রাজবাড়ী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ শহিদুল ইসলাম হিরণ, মন্দির ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম রাজবাড়ীর ফিল্ড সুপারভাইজার মোঃ ফারুক উদ্দিন, মন্দির ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের শিক্ষক ও অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
কর্মশালায় জেলার বিভিন্ন উপজেলার প্রকল্প শিক্ষক, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অংশ নেন। দিনব্যাপী এ কর্মশালায় প্রকল্পের বর্তমান কার্যক্রম, চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
কর্ম অধিবেশনে ৫টি গ্রুপভিত্তিক আলোচনা শেষে সমন্বয়কারীরা বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরেন। সুপারিশসমূহ এসডিজি’র অভিষ্ট অর্জনে মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম-ষষ্ঠ পর্যায় শীর্ষক প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে মনে করেন আলোচকরা।
কর্মশালা থেকে জানা গেছে, মন্দির ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমে রাজবাড়ীতে ৬৮টি শিক্ষাকেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে রাজবাড়ী সদরে ১৫টি, গোয়ালন্দে ৪ টি, কালুখালীতে ৮টি, বালিয়াকান্দিতে ৩১টি ও পাংশাতে ১০ টি রয়েছে। এছাড়াও মন্দির ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমে রাজবাড়ী জেলায় মোট ৬৮জন শিক্ষক রয়েছে। এর মধ্যে রাজবাড়ী সদরে ১৫ জন, গোয়ালন্দে ৪জন, কালুখালীতে ৮জন, বালিয়াকান্দিতে ১০জন ও পাংশাতে ৩১জন শিক্ষক রয়েছে।