“তামাক কোম্পানীর কূটকৌশল উন্মোচন করি, তামাক ও নিকোটিনমুক্ত বাংলাদেশ গড়ি”-এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস পালিত হয়েছে।
দিবসটি পালন উপলক্ষে গতকাল ৩১শে মে সকালে জেলা প্রশাসকের আম্রকানন চত্বর থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালী বের করা হয়। র্যালীটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়। র্যালী শেষে কালেক্টরেটের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) মোঃ ইমরুল হাসানের সভাপতিত্বে সভায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সদর সার্কেল) মোঃ আবু রাসেল, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার গোলাম রসূল ও সাবেক সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ রহিম বক্স বক্তব্য রাখেন।
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার সাদ আহমেদের সঞ্চালনায় জেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্টর সূর্য কুমার প্রামাণিক, এনজিও রাসের নির্বাহী পরিচালক ও জেলা এনজিও ফেডারেশনের সভাপতি মোঃ লুৎফর রহমান লাবু ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার দাস প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এ সময় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট উছেন মে, সহকারী কমিশনার মোল্লা ইফতেখার আহমেদ, সহকারী কমিশনার অংকন পাল, সহকারী কমিশনার আবু বকর সিদ্দিক, সহকারী কমিশনার মোঃ হাফিজুর রহমান, সহকারী কমিশনার মোঃ আশিকুজ্জামান, সহকারী কমিশনার শাহেদ খান, সদর উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা মোঃ আবু আব্দুল্লাহ, সিভিল সার্জন অফিসের সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা অফিসার মোকারেমা মানজুরা, ইয়াছিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ইকবাল হোসেন, ব্র্যাকের ডিস্ট্রিক্ট কো-অর্ডিনেটর প্রণব কুমার সাহাসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) মোঃ ইমরুল হাসান বলেন, তামাক ক্ষতিকর, এর দ্বারা ক্ষতি ছাড়া এক শতাংশ উপকার হওয়ার কোন সুযোগ নেই। তামাক ব্যবহার বা ধূমপান অত্যন্ত ক্ষতিকারক, যা কার্যত মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত দেহের প্রতিটি অঙ্গকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। তামাকের ব্যবহারের মাধ্যমে হৃৎপিন্ড, লিভার ও ফুসফুসকে আক্রান্ত করে। ধুমপানের ফলে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, ক্যান্সার (বিশেষত ফুসফুসের ক্যান্সার), প্যানক্রিয়াসের ক্যান্সার, ল্যারিংস ও মুখগহ্বরের ক্যান্সার) এর ঝুঁকি বহুগুণ বাড়ায়। তামাক উচ্চ রক্তচাপ ও প্রান্তীয় রক্তনালীর রোগ করতে পারে। তাই তামাক ব্যবহারে আমাদের সচেতন থাকতে হবে। তামাকের কুফল সম্পর্কে সকলকে জানাতে হবে। রাজবাড়ীতে তামাক মুক্ত ও নিয়ন্ত্রনে রাখতে সরকারী সকল দপ্তরের পাশাপাশি সুশীল সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
আলোচনা সভায় বক্তারা তামাকজাত পণ্যের উপর প্রতিহত এবং ব্যবহার নিরুৎসাহিত করার উপর বিশেষ জোরদার এবং একজন ব্যক্তির সামগ্রিক স্বাস্থের উপর সিগারেটসহ অন্যান্য তামাকজাত দ্রব্যের ক্ষতিকারক প্রভাব তুলে ধরেন। তামাক চাষ ও তামাকজাত পণ্যের মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি, পরিবেশ ও অর্থনৈতিক ক্ষতির বিভিন্ন দিক তুলে ধরে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে তামাকজাত পণ্যের প্রভাব মুক্ত রাখতে পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তুলে ধরেন। এছাড়াও তামাক নিয়ন্ত্রণে রাজবাড়ী জেলা জাতীয় সম্মাননার জন্য মনোনীত হওয়ায় জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জনসহ সকলকে ধন্যবাদ জানান।
আলোচনা সভা শেষে বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবস উপলক্ষে রচনা প্রতিযোগিতায় ৩জন বিজয়ীর মাঝে সনদপত্র ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়।