ঢাকা শনিবার, এপ্রিল ১২, ২০২৫
রাজবাড়ীতে করোনায় মেয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালে মারা গেলেন মা॥পাশাপাশি কবরে দাফন
  • মীর সামসুজ্জামান সৌরভ
  • ২০২১-০৮-১১ ১৪:১৪:২০
করোনায় রাজবাড়ী সদর উপজেলার রায়নগর গ্রামে গত ১০ই আগস্ট মেয়ে আকলিমা খাতুনের মৃত্যুর খবর পেয়ে তার মা আলিমা বেগমও মারা যায়। পরে তাঁদের একসঙ্গে পাশাপাশি কবরে দাফন করা হয়। একই দিনে মা-মেয়ের মৃত্যুতে এলাকায় শোকর ছায় নেমে এসেছে -মাতৃকণ্ঠ।

মহামারি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন আকলিমা খাতুন(৬০)। করোনা ও অন্যান্য শারীরিক জটিলতা নিয়ে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তাঁর মা আলিমা বেগম(৮০)। গত ১১ই আগস্ট সকালে করোনার কাছে হেরে যায় আকলিমা। 

  মেয়ের মৃত্যুর সংবাদটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মা আলিমা বেগমকে জানানো হলে এরপর তিনিও মারা যান। পরে তাঁদের একসঙ্গে পাশাপাশি কবরে দাফন করা হয়। এক সঙ্গে মা-মেয়ের মৃত্যুতে এলাকায় শোকর ছায় নেমে এসেছে।

  মর্মান্তিক এই হৃদয় বিদারক ঘটনাটি ঘটেছে রাজবাড়ী সদর উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নের রায়নগর গ্রামে।

  আলিম ওরফে আলিয়া বেগমের বাড়ি রাজবাড়ী সদর উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নের রায়নগর গ্রামে। আলিমা বেগমের স্বামীর নাম আকবর আলী মৃধা। আলিমা বেগমের মেয়ের নাম আকলিমা খাতুন(৬০)। আকলিমার স্বামীর নাম মোস্তাক আহমেদ।

  পরিবার সূত্রে জানা যায়, মেয়ে আকলিমা খাতুনের করোনা উপসর্গ দেখা দিলে প্রথমে রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল ভর্তি করা হয়। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা ইউনিটে ভর্তি করা হয়। 

  অন্যদিকে আকলিমার মা আলিমা বেগম করোনার উপসর্গ এবং বার্ধক্যজনিত জটিলতা নিয়ে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন্টের মাধ্যমে নমুনা পরীক্ষা করা হলে তিনি কোভিড আক্রান্ত বলে শনাক্ত হন। কোভিড ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত মঙ্গলবার করোনার কাছে হেরে যায় মেয়ে আকলিমা। সকাল ১০ টায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কোভিড ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। পরে তার মরদেহ রামকান্তপুর ইউনিয়নের রায়নগর গ্রামে নিয়ে আসা হয়। মা আলিমা তখনো জানতো না তার আদরের মেয়ে আকলিমা আর নেই। করোনা কেড়ে নিয়েছে তার আদরের মেয়েটিকে। আকলিমার পরিবার তাঁকে দাফন-কাফনের ব্যবস্থা করছিলো। ঠিক তখন মেয়ে আকলিমার মৃত্যুর সংবাদটি তার মা আলায়াকে জানানো হয়। এর কিছু সময় পরই মেয়ের মৃত্যুর সংবাদটি সইতে না পরে আলেয়া স্ট্রোক করে মারা যান। এরপর তার লাশটিও বাড়িতে আনা হয়। একসঙ্গে  মা-মেয়ের লাশ দেখে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। পরে মা আলিমা বেগমকে দাফন করার জন্য আরেকটি কবর খোঁড়া হয়।

  গত ১০ই আগস্ট বাদ আসর কাজীবাঁধা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে মা ও মেয়ের জানাযার নামাজ একসঙ্গে অনুষ্ঠিত হয়। এরপর তাঁদের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

  আকলিমা-মোস্তাক দম্পতির কোনো সন্তান ছিল না। মোস্তাক খুলনায় একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। চাকরী থেকে অবসর নেওয়ার পরে তাঁরা রামকান্তপুর রায়নগর গ্রামে বসবাস করতেন।

  রাজবাড়ী সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রমজান আলী খান বলেন, আকলিমা করোনা আক্রান্ত হলে তার মা আলেয়ায় সেবা যত্ন করে আসছিলো। পরে আকলিমার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে প্রথমে সদর হাসপাতাল ও পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই সে চিকিৎসাধীন ছিলো। মেয়ের সেবাযত্ম করে আলিমা বেগম করোনা আক্রান্ত হন। মেয়ে আকলিমার মৃত্যুর সংবাদ শুনে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মা আলিমা বেগম বেলা ১টার দিকে মারা যান। 

ফিলিস্তিনে অমানবিক হামলার প্রতিবাদে রাজবাড়ীতে যুব অধিকার পরিষদের বিক্ষোভ
আহলে হাদীছ আন্দোলন ও আহলে হাদীছ যুব সংঘ রাজবাড়ী জেলার শাখার আয়োজনে গাজায় গণহত্যার বিরুদ্ধে রাজবাড়ীতে
রাজবাড়ী জেলায় এসএসসি ও সমমান  পরীক্ষার ১ম দিনে অনুপস্থিত ২৩৩জন
সর্বশেষ সংবাদ