ঢাকা শুক্রবার, অক্টোবর ১৮, ২০২৪
দৌলতদিয়া বিআইডব্লিউটিএ’র টার্মিনালে অভিযান ঃ শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ
  • মইনুল হক মৃধা
  • ২০২৪-০২-০৫ ১৩:৫১:১৫

 রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় গতকাল ৫ই ফেব্রুয়ারী সকালে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের(বিআইডব্লিউটিএ) নিজস্ব জায়গায় অবৈধ দখলমুক্ত করতে বেকু মেশিন দিয়ে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।

 সকালে উচ্ছেদ অভিযানে বিআইডব্লিউটিএ’র আভিযানকি দল আসলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসীর বাঁধায় বেলা সাড়ে ১২টার দিকে উচ্ছেদ অভিযান কার্যক্রম শুরু করে বিআইডব্লিউটিএ’র কর্মকর্তাগণ। বিকাল পর্যন্ত কিছু দোকান ভাঙ্গা হলেও অনেক দোকান এখনও চালু রয়েছে। উচ্ছেদ অভিযান অসর্ম্পূণ রেখে কর্তৃপক্ষ কার্যক্রম স্থগিত করে চলে যায়।

 জানা গেছে, দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় বিআইডব্লিউটিএ’র বেশ কয়েকটি বড় টার্মিনাল রয়েছে। এ সকল টার্মিনালে বিভিন্ন স্থানে অবৈধ ভাবে কয়েক শত ছোট-ছোট দোকান ঘর স্থাপন করা হয়েছে। 

 বিআইডব্লিউটিএ সূত্র জানায়, একাধিকবার এ সকল দোকান ঘর সরিয়ে নিতে নোটিশ দিলেও দোকনীরা তা কর্ণপাত করেননি। তাই অবৈধ দখলমুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযান পরিচলনা করা হচ্ছে।

 এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা জানান, তারা নদী ভাঙনের শিকার হয়ে ভিটে-মাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন অনেক আগেই। এরপর পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর দৌলতদিয়া ঘাটের আয়-রোজগার নেই বললেই চলে। তারপরও ঘাট এলাকায় ক্ষুদ্র ব্যবসা করে আধপেট খেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে কোনমতে তাদের দিন কাটছিল। আজ তাও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। 

 ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী মোঃ হোসেন আলী বলেন, এমনিতে নদী ভাঙনে সব চলে গেছে। টার্মিনালে একটি টং দোকানে চা, পান বিক্রি করে কোন মতো সংসার চলে। তাও আজ বন্ধ হয়ে গেল। এ সময় তিনি দাবি করেন, কর্তৃপক্ষ তাদেরকে কোন নোটিশ দেয়নি। হঠাৎ করেই আজ তাদের দোকান ভেঙে দেয়া হল।

 উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দেন নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ হাসান মারুফ। রাজবাড়ী জেলা পুলিশ, নৌ-পুলিশ ও গোয়ালন্দ ঘাট থানার পুলিশ অভিযানে সহযোগিতা করে।

 এ সময় গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র, গোয়ালন্দ ঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ প্রাণবন্ধু চন্দ্র বিশ্বাস, বিআইডব্লিউটিএ’র আরিচা অঞ্চলের বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা এস এম সাজ্জাদুর রহমান, উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ মকবুল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

 এ দিকে খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যান গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওযামী লীগের সভাপতি মোঃ মোস্তফা মুন্সী, গোয়ালন্দ পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ নজরুল ইসলাম মন্ডল, ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ আসাদুজ্জামান চৌধুরী, দৌলতদিয়া  ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান মন্ডলসহ দৌলতদিয়া বাজারের ব্যাবসায়ী নেতৃবৃন্দ। 

 তারা নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকার সাধারণ ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ কার্যক্রম বন্ধ রাখতে কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানান।

 এ সময় দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুর রহমান মন্ডল বলেন, নদী ভাঙনে সর্বত্র হারানো মানুষ এখানে সামান্য পুঁজিতে ব্যবসা-বাণিজ্য করে পরিবারের মুখে আহার তুলে দিচ্ছে। সেখান থেকে আজ তাদের উচ্ছেদ করে দেয় হচ্ছে। এই অসহায় মানুষগুলোর জীবন কিভাবে চলবে একবার ভেবে দেখা উচিত ছিল। 

 তিনি ক্ষুব্দ হয়ে বলেন, ‘বিআইডব্লিউটিএ’র কিছু অসাধু কর্মচারীরা এ সকল ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিয়মিত টাকা নিয়ে থাকে। তাদের টাকার অঙ্ক বাড়াতে মাঝে মধ্যে উচ্ছেদ নোটিশ প্রদান করা হয়। তারপরও টাকার অঙ্ক না বাড়ায় এ ধরনের উচ্ছেদ অভিযান চালানো হচ্ছে।’

 বিআইডব্লিউটিএ’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ হাসান মারুফ জানান, যথারীতি নোটিশের মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময় দিয়ে এবং সকল ধরনের আইন কানুন মেনে এখানে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় বিআইডব্লিউটিএ’র নিজস্ব জমিতে অবৈধ ভাবে গড়ে ওঠা শতাধিক স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। 

 

গোয়ালন্দে প্রবাসী সবুজ হত্যার সাথে জড়িতদের ফাঁসির দাবীতে মানববন্ধন
গোয়ালন্দে সাজাপ্রাপ্ত দুই পলাতক আসামী গ্রেপ্তার
 কালুখালীতে ভোক্তা অধিকারের অভিযানে দুই প্রতিষ্ঠানকে ১০হাজার টাকা জরিমানা
সর্বশেষ সংবাদ