আমেরিকায় পাঠানোর কথা বলে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে খাঁন হুমায়ুন কবির(৪৭) নামের এক প্রতারককে গত ১লা জুলাই বিকেলে রাজবাড়ী অফিসার্স ক্লাবের সামনে থেকে জেলা গোয়েন্দা শাখার(ডিবি’র) সদস্যরা গ্রেফতার করেছে।
এ সময় তার কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ভূয়া জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্ম সনদ, টিন সার্টিফিকেট, ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ বিভিন্ন ভুয়া ডকুমেন্ট জব্দ করা হয়।
গতকাল ২রা জুলাই বিকেলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিবি।
গ্রেফতারকৃত খাঁন হুমায়ুন কবির নড়াইল জেলার নড়াগাতি থানার ঘড়িডাঙ্গা গ্রামের মৃত শামসুল হক খাঁনের ছেলে।
ডিবি জানায়, গ্রেফতারকৃত হুমায়ুন কবির বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে চাকুরি করত। ২০১০ সালে তার চাকরি চলে যায়। চাকরি চলে যাওয়ার পরে সে আর বাড়ীতে না গিয়ে ঢাকায় যেয়ে প্রতারণার উদ্দেশ্যে কৌশলে তার জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্ম সনদ, টিন সার্টিফিকেট, ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ বিভিন্ন ভূয়া ডকুমেন্ট তৈরী করে। এতে তার নাম হুমায়ুনের পরিবর্তে মনিরুজ্জামান ব্যবহার করে ও বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানা-বাসা-৫৬১, রাস্তা-১৫, রূপনগর টিনশেড, সেকশন-০৫, ঢাকা ব্যবহার করে। মূলত ওই বাসার ঠিকানাটি মোঃ বাহেজ উদ্দিন নামের এক ব্যক্তির। মোঃ বাহেজ উদ্দিন তার স্ত্রী সন্তানসহ বর্তমানে আমেরিকায় বসবাস করেন।
বাহেজ উদ্দিন আমেরিকায় থাকায় হুমায়ুন কবির তার বাসা দেখাশোনা করত। এ সুযোগে সে বাহেজ উদ্দিনকে বাবা এবং তার স্ত্রীকে মা বানিয়ে উল্লেখিত ঠিকানা ব্যবহার করে এ সকল ভুয়া কাগজপত্র প্রস্তুত করে।
এরপর সে তার প্রকৃত নাম, ঠিকানা গোপন রেখে মোঃ বাহেজ উদ্দিনের ঠিকানা ব্যবহার করে প্রতারণা শুরু করে। হুমায়ুন কবির রূপনগরে থাকাকালীন সময়ে এবং পরবর্তীতে রাজবাড়ী জেলার বানিবহ এলাকার বিভিন্ন মানুষের বিশ্বাস অর্জন করে তাদের কাছ থেকে প্রতারণামূলকভাবে আমেরিকা পাঠানোর কথা বলে নগদ ১৩ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে।
এ ঘটনায় বানিবহ এলাকার আলী হোসেন বাদী হয়ে হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে রাজবাড়ী সদর থানায় একটি প্রতারণা মামলা করেন। পরবর্তীতে ওই মামলায় আসামী হুমায়ুন জামিনে এসে ভুক্তভোগীদের নামে একের পর এক মামলা করা শুরু করে। সে মিথ্যা নাম ঠিকানা দিয়ে রাজবাড়ী আদালতে এরকম ১১টি মামলা করে।
ডিবি আরো জানায়, হুমায়ুন তার প্রথম স্ত্রী পাপিয়াকে তালাকপ্রাপ্ত দেখিয়ে বানিবহ এলাকায় রেখা খানম নামে একটি মেয়েকে বিয়ে করে। মূলত তার প্রথম স্ত্রী তালাকপ্রাপ্ত নন। বিয়ের কাবিন নামায় হুমায়ুন মিথ্যা নাম ঠিকানা ব্যবহার করে। তার জাতীয় পরিচয়পত্র এবং জন্ম সনদে জন্ম তারিখও রয়েছে আলাদা আলাদাভাবে।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মোঃ মনিরুজ্জামান খান বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে প্রতারক হুমায়ুন কবিরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে যশোরের কোতয়ালী থানায় একটি মামলা রয়েছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে রাজবাড়ী সদর থানায় মামলা রুজু প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।