রাজবাড়ী সদর উপজেলার মাটিপাড়ায় পূর্ব শত্রুতার জেরে পৌর বিএনপির সদস্য কাজী আরাফাত হাসান জিসানের পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে মাছ নিধনের অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে।
এতে প্রায় আনুমানিক ১৬ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবী করেছেন ভুক্তভোগী কাজী আরাফাত হাসান জিসান।
গত ২১শে এপ্রিল দিনগত রাতে মাটিপাড়ার কাজী আরাফাত হাসান জিসানের ইটভাটার পুকুরে বিষ প্রয়োগের ঘটনা ঘটে। গতকাল ২২শে এপ্রিল সকালে মাছ মরে ভেসে উঠলে বিষ প্রয়োগ করার বিষয়টি টের পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় ভ্ক্তুভোগী মাছ চাষী কাজী আরাফাত হোসেন জিসান বাদী হয়ে রাজবাড়ী সদর থানায় ৪ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ৪/৫ জনকে আসামী করে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা সাদ্দাম হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ইটভাটার পাশাপাশি কাজী আরাফাত হাসান জিসান মাছ চাষ করে আসছেন। রাতে কারা যেনো তার পুকুরে বিষ দিছে। পুকুরে রুই, কাতল, তেলাপিয়া, পাঙাস, পুটি, শিংসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ছিল। সকালে এসে দেখি পুকুরে মাছ মরে ভেসে রয়েছে।
মোতাহার নামের আরেকজন বলেন, আমি ভাটাতেই কাজ করি। সকালে এসে দেখি বিভিন্ন প্রকারের মাছ মরে ভেসে আছে। ৮মাস আগে ৩লাখ টাকারও অধিক ছোট মাছের পোনা ছেড়েছিলেন আমাদের ভাটা মালিক।
জেলে উজ্জল সরদার বলেন, বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় আড়াই লাখ টাকার মাছের পোনা ৮ মাস আগে এই পুকুরে ছেড়েছিলাম। বর্তমানে এই পুকুরে ২০০ থেকে ২৫০ মন বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ছিলো। আমরা এসে দেখি মাছ মরে ভেসে রয়েছে। মাছ পচে দুর্গন্ধ ছড়িয়েছে। পরে আমি দলবল নিয়ে জাল টান দিয়ে মরা মাছগুলো পুকুর থেকে সরিয়ে ফেলি। যে পুকুরে টাকি ও শিং মাছ মরে ভেসে উঠে সেই পুকুরে আর মাছ থাকে না। সবই মরে যায়। গ্যাসে মাছ এভাবে মারা যায় না। শত্রুতা করে পুকুরে বিষ দিয়ে মাছ মেরে ফেলা হয়েছে।
পুকুর মালিক কাজী আরাফাত হাসান জিসান বলেন, আমি একজন ব্যবসায়ী। বিভিন্ন ব্যবসার পাশাপাশি মাছ চাষ করে থাকি। আমার সাথে জমিজমা নিয়ে কয়েকজনের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। গতকাল তারা রাতের অন্ধকারে আমার পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে। আনুমানিক ১৬ লক্ষাধিক টাকার মাছ ছিল এই পুকুরে। আমি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি আমি এর বিচার চাই। ভবিষ্যতে যাতে আর কোন মৎস্য খামারির বিষ প্রয়োগ করে এমন ক্ষতিগ্রস্ত না করে। আমি দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করছি।
রাজবাড়ী সদর সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হালিমা সরদার বলেন, খবর পেয়ে সরেজমিনে গিয়ে পুকুর থেকে পানি, ছবি ও মাছ সংগ্রহ করা হয়েছে। পুকুর মালিককে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য বলা হয়েছে।’
রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মাহমুদুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে আমাদের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্ত পুকুরের মালিক থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।