ঢাকা বৃহস্পতিবার, মে ২, ২০২৪
দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাট এখন যাত্রী শূন্য অলস সময় পার করছে চালক-শ্রমিকরা
  • মইনুল হক মৃধা
  • ২০২৩-০৪-০৬ ১৭:০১:১৩

 এক সময়ে যাত্রীদের চাপে প্রাণচঞ্চল দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একমাত্র প্রবেশদ্বার রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া লঞ্চঘাট এখন যাত্রী শূন্য হয়ে প্রায় অচলাবস্থা হয়ে পড়েছে। 
  যাত্রীর অভাবে অলস সময় পার করছে লঞ্চের চালক ও শ্রমিকেরা। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে দেশের গুরুত্বপূর্ণ এ ঘাটটিতে।
  এছাড়াও রমজান মাস উপলক্ষে সড়কে যাত্রী কম থাকায় ৩০-৪০ মিনিট পরপর ২৫-৩০ জন যাত্রী নিয়ে দৌলতদিয়া ঘাট থেকে লঞ্চগুলো পাটুরিয়া ঘাটে ছেড়ে যাচ্ছে। আগে যেখানে ২০ মিনিট পর পর ৮০-১০০ জন যাত্রী নিয়ে লঞ্চগুলো ছেড়ে যেতো। যাত্রী কমে যাওয়ায় লোকসানে পড়েছেন লঞ্চের মালিকেরা।
  গতকাল ৬ই এপ্রিল দুপুর ১টার দিকে দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটে দেখা গেছে, পন্টুনের সাথে সারি সারি লঞ্চ বেঁধে রাখা হয়েছে। যাত্রী না থাকায় সুনসান নীরবতা ঘাটে। দীর্ঘক্ষণ পরপর স্বল্পসংখ্যক যাত্রী নিয়ে লঞ্চ ছেড়ে যাচ্ছে। মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাট থেকেও হাতে গোনা কয়েকজন যাত্রী নিয়ে ঘাটে ভিড়ছে লঞ্চ।
  দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাট সূত্রে জানা গেছে, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে মোট ৩৩টি লঞ্চ চলাচল করে। প্রতিদিন দৌলতদিয়া ঘাট থেকে বর্তমানে ১ হাজার থেকে ১৫'শ যাত্রী পারাপার হচ্ছে। যা আগে যাত্রী পার হতো ৪ থেকে ৫ হাজার। বিশেষ করে দৌলতদিয়া ও পাটুরিয়া ঘাটে সব সময় যাত্রীদের চাপ ছিল। তবে পদ্মা সেতু চালুর পর দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ফেরী ঘাটে দূরপাল্লার পরিবহনের পাশাপাশি পণ্যবাহী গাড়ী, ব্যক্তিগত গাড়ী কমেছে। সেই সঙ্গে নদী পার হওয়া যাত্রীদের চাপও কমেছে।
  কুষ্টিয়া এলাকার বাসিন্দা মনিরুজ্জামান বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় ঘাট একেবারে ফাঁকা হয়ে গেছে। তারপর আবার রমজান মাস। মানুষ এ গরমের মধ্যে কোথাও বেরও হচ্ছেনা। তিনি কুষ্টিয়া থেকে লোকাল বাসে দৌলতদিয়া ঘাটে নেমেছেন। নদী পাড় হওয়ার পর পাটুরিয়া থেকে বাসে সাভার যাবেন। লঞ্চ ছাড়ার অপেক্ষায় ঘাটে প্রায় ২৫মিনিট বসে আছেন। যাত্রী না থাকায় ঘাট থেকে লঞ্চও ছাড়ছে না।
  লঞ্চ ঘাটের কলা বিক্রেতা জাহিদ শেখ বলেন, ঘাটে যাত্রী বেশী থাকলে আমরা প্রতিদিন ৩হাজার টাকার কলা বিক্রি করতাম, এখন ঘাটে যাত্রী একদম কম থাকায় প্রতিদিন ৪-৫শ টাকার কলা বিক্রি করছি। তাতে করে আমাদের বেঁচে থাকা কষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
  এম ভি তাজমহল লঞ্চের চালক কামরুল হোসেন বলেন, আগে ২০ মিনিট পরপর শতাধিক যাত্রী নিয়ে ঘাট ছেড়ে যেতাম। এখন প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষা করেও মাত্র ২৫ থেকে জন যাত্রী নিয়ে লঞ্চ ছাড়তে হচ্ছে। এতে করে তেলের খরচও উঠছে না। এতে আমরাসহ মালিক পক্ষ লোকসানে রয়েছে।
  লঞ্চ ঘাটের টিকিট কাউন্টারে থাকা মোবারক খান বলেন, পদ্মা সেতু চালুর আগে ঘাট দিয়ে প্রতিদিন ৪-৫ হাজারের মতো যাত্রী পারাপার হতো। এখন রমজান মাস ও ঘাটে যানবাহনের চাপ কম থাকায় ১২-১৫ শ যাত্রী ২৪ ঘন্টায় পারাপার হচ্ছে। লঞ্চঘাটে কর্মরত মালিক সমিতি ও ঘাট ইজারাদারের লোকজনের প্রতিদিনের হাজিরার টাকা ওঠানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
  আরিচা লঞ্চ মালিক সমিতির দৌলতদিয়া ঘাটের তত্ত্বাবধায়ক নূরুল আনোয়ার মিলন বলেন, যাত্রী শূন্য দৌলতদিয়া ও পাটুরিয়া লঞ্চঘাট। লঞ্চের জন্য আগে ঘাটে ঘন্টার পর ঘন্টা যাত্রীরা অপেক্ষা করতো। আর এখন যাত্রী স্বল্পতায় লঞ্চগুলো দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে অল্প কয়েকজন যাত্রী নিয়ে দৌলতদিয়া ঘাট ছেড়ে যাচ্ছে। বর্তমানে ফেরী ঘাটেও কোন গাড়ী সিরিয়ালে নেই। ফেরীগুলো ঘাটে গাড়ীর জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করে তারপর ছেড়ে যাচ্ছে।
  বিআইডব্লিউটিএ’র আরিচা কার্যালয়ের ট্রাফিক পরিদর্শক মোঃ আফতাব হোসেন বলেন, যাত্রী কমে গেলেও জনস্বার্থে লঞ্চ পারাপার স্বাভাবিক আছে। বর্তমানে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ৩৩টি লঞ্চ যাত্রী পারাপারে চলাচল করছে।
  তিনি আরও বলেন, রমজান মাস উপলক্ষে এবং তীব্র গরম ও রোদ্রে মানুষ কম বের হচ্ছে। ২০ রোজার পর থেকে যাত্রী বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

 

 রাজবাড়ীতে ছাত্রলীগের উদ্যোগে পথচারীদের মাঝে শরবত বিতরণ
বালিয়াকান্দিতে চলাচলকারী অবৈধ যানবাহন  প্রতিনিয়ত ঘটাচ্ছে দুর্ঘটনা॥নির্বিকার প্রশাসন
রাজবাড়ী জেলা নির্মাণ শ্রমিকের উদ্যোগে মহান মে দিবস পালিত
সর্বশেষ সংবাদ