রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ পৌরসভার ৯নম্বর ওয়ার্ডের কাইমদ্দিন প্রামানিকের পাড়ায় আগুনে পুড়ে নিঃস্ব হয়ে যাওয়া ফারুক শেখের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সিরাজুল হক। 
  গোয়ালন্দ পৌর ৩নম্বর ওয়ার্ডের নছর উদ্দিন সরদার পাড়ার বাসিন্দা সিরাজুল হক অসহায় পরিবারটির জন্য একটি চারচালা টিনের ঘর তৈরি করে দিয়েছেন।
  জানা যায়, গত ১লা মে সকালে ঘর নির্মাণের যাবতীয় সরঞ্জাম নিয়ে আগুনে পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ফারুক শেখের বাড়ীতে হাজির হয়ে নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন ব্যবসায়ী সিরাজুল হক। 
  এ সময় গোয়ালন্দ পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও ৯নম্বর ওয়ার্ডের পৌর কাউন্সিলর নাসির উদ্দিন রনি ও গোয়ালন্দ বাজারের ব্যবসায়ী লাল মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
  ঘর পেয়ে ফারুক শেখ বলেন, আমরা দিন মজুর মানুষ। দিনে আনি দিনে খাই। প্রায় এক মাস আগে আগুনে বসত বাড়ী পুড়ে নিঃস্ব হয়ে যাই আমরা। পড়নের কাপড় ছাড়া কিছু নাই আমাদের। সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে আগুনে। সর্বশেষ থাকার জায়গা হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ি। পরে আমাদের ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নাসির উদ্দিন রনি ভাই নিজে এসে তাৎক্ষণিকভাবে আমাদের এক মাসের খাদ্য সহায়তা করে এবং একটি ঘর পাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। হঠাৎ একদিন কমিশনার রনি ভাই ব্যবসায়ী সিরাজুল ভাইয়ের কাছে নিয়ে গেলে তিনি একটি চৌচালা ঘর তৈরির প্রুতিশ্রুতি দেন। আজ একটি চৌচালা ঘর তৈরির যাবতীয় সরঞ্জাম এবং ঘর তৈরির শ্রমিকের মজুরিসহ প্রায় দুইলক্ষ টাকার সামগ্রী বুঝিয়ে দিয়েছেন। আমরা পরিবারের সদস্যরা সিরাজ ভাইয়ের কাছে চিরকৃতজ্ঞ।
  কাউন্সিলর নাসির উদ্দিন রনি বলেন, পৌর ৯নম্বর ওয়ার্ড আমার নিজের এলাকা। আগুন লাগার খবর শোনা মাত্রই ফায়ার সার্ভিস স্টেশনকে খবর দিলে তারা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে কিন্তু ততক্ষণে বসত বাড়ীর সবগুলো ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। তাৎক্ষনিক ওই স্থানে আগুনে পোড়া তিনটি পরিবারকে এক মাসের খাবারের ব্যবস্থা করি। এরমধ্যে ফারুক শেখের পরিবারের সবকিছু পুড়ে যায়। সবচেয়ে বেশী ক্ষতি হয়েছে তার। পরের দিন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়রকে নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের বাড়ীতে উপস্থিত হয়ে নগদ সাহায্য তুলে দেয়া হয় এবং সরকারী ভাবে কিছু টিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আশা করি অচিরেই এসব পেয়ে যাবে পরিবার তিনটি। সরকারী প্রসেসিং একটু দেরি হওয়াতে সিরাজ ভাইয়ের কাছে ক্ষতিগ্রস্ত ফারুক শেখকে নিয়ে গেলে তিনি সবকিছু শুনে নিজ খরচে তাকে ঘর করে দেয়ার কথা বলেন। আজ তা বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। সিরাজ ভাইয়ের এ মানবিক কাজের জন্য তাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
  ব্যবসায়ী মোঃ সিরাজুল হক বলেন, আমি বিভিন্ন পত্রিকার সংবাদের মাধ্যমে এবং পৌর ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের মুখে পরিবার তিনটির অসহায়ত্বের কথা জানতে পারি। এর মধ্যে ফারুক শেখের সবচেয়ে বেশী ক্ষতির কথা শুনে তার বসবাসের জন্য একটি চৌচালা ঘরের ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রুতি দেই। আমার প্রতিশ্রুতি রক্ষায় আজ এ ঘর নির্মাণকাজের যাবতীয় সরঞ্জাম পরিবারের হাতে বুঝিয়ে দিতে পেরে আমি মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। অসহায় পরিবারের পাশে এভাবেই যেনো সারাজীবন থাকতে পারি এজন্য সবার কাছে দোয়া কামনা করছি। আজ আমি আমার সামান্য চেষ্টায় একটি ঘরের ব্যবস্থা করলাম এবং সমাজের যেসকল বিত্তবান মানুষ আছেন তাদেরকে পরিবার তিনটির পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানাচ্ছি।
  উল্লেখ্য, গত ৬ই এপ্রিল গোয়ালন্দ পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাইমদ্দিন প্রামানিকের পাড়ায় চুলার আগুন থেকে তিনটি বসতঘর ও চারটি রান্না ঘরসহ মোট সাতটি ঘর পুড়ে যায়। তিনটি পরিবারের মধ্যে ২টি পরিবারের ক্ষতি কম হলেও ফারুক শেখের পরিবারের সর্বত্র আগুনে পুড়ে নিঃস্ব হয়ে যায়।