ড্রাইভিং লাইসেন্স ও ফিটনেস সার্টিফিকেট প্রদানে দালালদের মাধ্যমে ঘুষ লেনদেনসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে গতকাল ৭ই মে ছদ্মবেশে রাজবাড়ী বিআরটিএ অফিসে অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক)।
গতকাল ৭ই মে বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দুদকের ফরিদপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের একটি এনফোর্সমেন্ট টিম সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজের নেতৃত্বে রাজবাড়ী বিআরটিএ অফিসে এই অভিযান পরিচালনা করে।
এ সময় দালাল ধরে লাইসেন্স ও গাড়ীর রেজিস্ট্রেশন করার সত্যতা পায় তারা। তখন হাতেনাতে ৪জন দালালকে গ্রেপ্তার করে দুদকের কর্মকর্তারা।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- রাজবাড়ী সদর উপজেলার চরলক্ষীপুর গ্রামের আব্বাস আলী খানের ছেলে মোঃ আশিক খান, রামকান্তপুর ইউনিয়নের কাজীবাধাঁ বেথুলিয়া গ্রামের মৃত বেলায়েত হোসেনের ছেলে মোঃ আকরামুজ্জামান, গোপীনাথদিয়া গ্রামের রহমত আলী মৃধার ছেলে লিয়াকত আলী মৃধা ও রাজবাড়ী শহরের কাজীকান্দা গ্রামের আব্দুল মতিনের ছেলে মোঃ মনসুর আহমেদ।
এ সময় আশিক খান নামের দালালের কাছ থেকে ৩৩ হাজার ১০০ টাকা, মোঃ আকরামুজ্জামানের কাছ থেকে ২৫ হাজার ৮০ টাকা ও লিয়াকত আলী মৃধার কাছ থেকে ১৪ হাজার ২৪০ টাকা উদ্ধার করা হয়। এসব টাকা তারা বিভিন্ন ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে আসা বিভিন্ন পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে গ্রহণ করেছে।
দুদকের ফরিদপুর সমন্বিত ফরিদপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজ বলেন, রাজবাড়ী বিআরটিএতে ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে ভোগান্তি ও ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রধান কার্যালয়ে এনফোর্সমেন্ট ইউনিট কর্তৃক নির্দেশিত হয়ে ফরিদপুর জেলা কার্যালয় আজকের রাজবাড়ী বিআরটিএ তে অভিযান পরিচালনা করেছি। অভিযান পরিচালনাকালে আমরা ছদ্মবেশে বিআরটিএ’র বিভিন্ন সেবা কার্যক্রম পরিলক্ষিত করেছি। পরিদর্শন কালে আমরা দেখেছি বিআরটিএ অফিসে দালাল চক্রের আনাগোনা রয়েছে। সেবা পেতে কি ধরনের ভোগান্তি হয় তা আমরা স্বচক্ষে দেখেছি এবং অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। আমরা অভিযানকালে ৪জন দালালকে আটক করেছি। তিন দালালের কাছ থেকে ৭২ হাজার ৪২০ টাকা উদ্ধার করেছি। যেসব টাকাগুলো তারা বিভিন্ন পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে নিয়েছে। এসব দালালগুলো বিআরটিএ অফিসের মধ্যে থাকতো। তাদের জন্য অফিসের মধ্যে আলাদা রুম ছিল।
তিনি আরও বলেন, আমরা রাজবাড়ী বিআরটিএ’র রাজবাড়ী ইন্সপেক্টরের কাছে কাগজপত্র চেয়েছি। এছাড়াও আমরা প্রাথমিক যে সত্যতা পেয়েছি এবং পরবর্তী কাগজপত্র বিশ্লেষণ করে আমরা কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করব। পরবর্তী কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
অভিযানে ফরিদপুর দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান, উপ-সহকারী পরিচালক কামরুল হাসানসহ টিমের অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। গ্রেফতারকৃতদের রাজবাড়ী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ড্রাইভিং লাইসেন্স ও ফিটনেস সার্টিফিকেট প্রদানে দালালদের মাধ্যমে ঘুষ লেনদনসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে রাজবাড়ীসহ দেশের ৩৫টি বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ(বিআরটিএ) অফিসে অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক)।