ঢাকা শনিবার, জুন ১৪, ২০২৫
পনের দিনেও কমেনি ঈদ বকশিশের নামে অতিরিক্ত ভাড়া॥বিক্ষুব্ধ যাত্রীরা
  • মইনুল হক মৃধা
  • ২০২৫-০৬-১২ ১৭:২৭:৪৬

 ঈদের আনন্দে বুকভরা হাসি নিয়ে পরিবার-পরিজনের সাথে বাড়ী ফিরেছিল কর্মজীবি মানুষ। কিন্তু ঈদের ছুটির ৭দিন আগে শুরু হওয়া ‘ঈদ বকশিশ’ নামে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া আজও শেষ হয়নি। ঈদ বকশিশের বিক্ষুব্ধ কর্মমুখী সাধারণ যাত্রী এবং স্বাভাবিক চলাচলকারী যাত্রীরা।
 সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে যাত্রী ও চালকদের থেকে জানা যায়, রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ফরিদপুর, রাজবাড়ী সদর, কালুখালী পাংশা, মধুখালী, মাগুরাসহ বিভিন্ন জায়গা পর্যন্ত চলাচলকারী সিএনজি, অটোরিকশা, থ্রি-হুলার ও ব্যাটারিচালিত যানবাহনের চালকরা এখনো যাত্রীদের কাছ থেকে পূর্বনির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছেন।
 দৌলতদিয়া বাস টার্মিনাল থেকে ফরিদপুর ডিসি অফিসের সামনে পর্যন্ত সিএনজি সাধারণত ভাড়া ৮০ টাকা হলেও ঈদের ৭দিন আগে থেকেই চালকরা ১০০ টাকা করে ভাড়া নিচ্ছেন। ঈদের ছুটি শেষ হয়ে যাওয়ার পরও সেই অতিরিক্ত ২০ টাকা ভাড়া এখনো যাত্রীদের গুনতে হচ্ছে।
 এ বিষয়ে চালকদের সাথে কথা বললে তারা সাফ জানান, “ভাই, ঈদের সময় একটু বকশিশ নিই। সবারই তো কিছু না কিছু পাওয়া উচিত।” তবে প্রশ্ন ওঠে, ঈদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও এই ‘বকশিশ’ কতদিন চলবে? সহজ সরল ভাষায় চালকদের উত্তর ছিল, ঈদের যাত্রী যাওয়া শেষ হলে। তবে আমরা নিজেরা একাধিকবার বসে সিদ্ধান্ত নিতে চাচ্ছি “ভাড়া ১০০ টাকা নির্ধারণ রেখে দিতে পারি তবে কোন বাঁধা না আসলে।  
 ভাড়া বৃদ্ধি কিভাবে এবং কার নির্দেশে বৃদ্ধি করা হয় জানতে চাইলে তারা বলেন, আমরা নিজেরা নির্ধারণ করি। এর জন্য কারো নির্দেশ বা পরামর্শ নেওয়া হয় না। 
 অন্যদিকে যাত্রীরা বলছেন ভিন্ন কথা। ভুক্তভোগী এক দিনমজুর যাত্রী জানান, “আমরা ছোট চাকরি করি। ঈদের বোনাস পাই না, আবার যারা পায় তাও একবারে। চালকরা ১৫ দিন ধরে শুধু ঈদের নামে অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছে। এটা তো জুলুম।”
 শারমিন আক্তার নামের এক যাত্রী বলেন, রেগুলার ৮০ টাকা ভাড়া দেওয়া হয়। কিন্ত আজ ১০০ টাকা চাচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা ঈদ বকশিশ কত দিন দিব। ঈদের ৭দিন আগে থেকে ঈদ বকশিশ দেওয়া শুরু হয়েছে আবার ঈদের ৭দিন পেড়িয়ে গেলেও ঈদ বকশিশ নেওয়া শেষ হয়নি।
 মনোয়ার নামের এক যাত্রী ফরিদপুর থেকে সিএনজিতে দৌলতদিয়া ঘাটে এসেছেন। তিনি বলেন, ঈদ বকশিশ আর কত দিব। আজও যানবাহন চালকগণ ঈদ বকশিশ যাচ্ছে। শুধু চাচ্ছে না, রীতিমত বাধ্য করছেন। আমরা যে কর্ম করি সেখানে ঈদ বকমিশ মাত্র একবার দিয়েছে। আর আমরা টানা ১৫দিন যাবৎ ঈদ বকশিশ দিচ্ছি। তিনি বলেন, এটা রীতিমতো নিরব চাঁদাবাজি। এমন অভ্যাস থেকে পরিবর্তন হওয়া প্রয়োজন।  
 এদিকে চালকদের সাথে এই ঈদ বকমিশ বা বাড়তি ভাড়া নিয়ে অনেক সময় বাকবিতন্ডাও হচ্ছে যাত্রীদের। কেউ কেউ প্রতিবাদ করছেন, কেউ কেউ নিরবে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে যাচ্ছেন গন্তব্যে।
 এমন অবস্থায় রাজবাড়ী জেলায় অটোরিকশা ও অন্যান্য যানবাহনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের এই অনিয়ম রোধে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি ও কার্যকর পদক্ষেপ দাবী করেছেন যাত্রীরা। ঈদ বকশিশ এর নামে ‘চাঁদাবাজি’। “ঈদের নাম করে গরীব যাত্রীদের পকেট কাঁটার এই সংস্কৃতি বন্ধ হওয়া জরুরি। ঈদের আনন্দ যেন কারো জন্য বোঝা হয়ে না দাঁড়ায়।”
 উল্লেখ্য, রাজবাড়ী জেলার বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে প্রায় ২হাজার সিএনজি, অটোরিক্সা, থ্রি-হুইলা, ব্যাচারী চালিত, নসিমন-কমিনসহ ছোট ছোট বিভিন্ন প্রকার যানবাহন নিয়মিত চলাচল করে। 

 

ঈদ শেষে দৌলতদিয়া ঘাটে কর্মস্থলে ফেরা মানুষের ভিড়
কাজীকান্দা প্রিমিয়ার লীগ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা উদ্বোধন করেন সাবেক এমপি খৈয়ম
শব্দ দূষণ রোধে রাজবাড়ীতে দুইটি যানবাহনকে জরিমানা
সর্বশেষ সংবাদ