ঢাকা বৃহস্পতিবার, মে ৯, ২০২৪
গোয়ালন্দের পদ্মায় চায়না দুয়ারী নামে বিশেষ ফাঁদ দিয়ে অবাধে মাছ শিকার
  • মইনুল হক মৃধা
  • ২০২১-০৯-১১ ১৭:১২:০০

রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলাধীন পদ্মা নদীর বিভিন্ন স্থানে চায়না দুয়ারী নামের বিশেষ ধরনের ফাঁদ ব্যবহার করে নির্বিচারে মাছ শিকার করছে স্থানীয় জেলেরা। 

  খুব সহজে বেশী মাছ ধরার এই ফাঁদের ব্যবহারে ভবিষ্যতে দেশী প্রজাতির মাছ অস্তিত্ব সংকটে পড়বে বলে মৎস্য খাত সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। 

  জানা গেছে, মাছের প্রজনন মৌসুমে নিষিদ্ধ কারেন্ট জালের পর এবার ভয়ঙ্কর চায়না দুয়ারী নামক ফাঁদে দেশী প্রজাতির সব মাছ ধরা পড়ছে। সহজেই সব ধরনের মাছ ধরার আশায় পদ্মা নদী জুড়ে জেলেরা অহরহ ব্যবহার করতে শুরু করেছে এই জাল। এ ধরনের ক্ষতিকর ফাঁদ ব্যবহার বন্ধে মৎস্য বিভাগের সুনির্দিষ্ট কোন আইন না থাকায় সংশ্লিষ্টরা অভিযান চালিয়েও নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে মৎস্য আইনের বিভিন্ন ধারা-উপধারা প্রয়োগ করে মৎস্য বিভাগ নিয়মিত নদীতে অভিযান পরিচালনা করছে।

  পদ্মায় থাকা মিঠা পানির সব ধরনের দেশী প্রজাতির মাছ সুক্ষ্ম এই ফাঁদে ধরা পড়ছে। বিশেষ করে নদীর পানি হ্রাস-বৃদ্ধি ও মাছের প্রজনন মৌসুমে ডিমওয়ালা চিংড়ি, পুঁটি, টেংরা, কৈ, সিং, মাগুর, তেলাপিয়া, বেলে, বোয়াল, শোল, টাকিসহ প্রাকৃতিক সব মাছ এই চায়না দুয়ারীতে নিধন হচ্ছে। 

  চায়না দুয়ারী সাধারণত এক থেকে দেড় ফুট উচ্চতার, ৬০ থেকে ১০০ ফুট দৈর্ঘ্যরে ও ক্ষুদ্র ফাঁসবিশিষ্ট ঢলুক আকৃতির হয়ে থাকে। লোহার ৪টি রড ও রডের রিং দিয়ে খোপ আকারে তৈরী করে চারপাশ সুক্ষ্ম জাল দিয়ে ঘিরে দিয়ে তৈরি করা হয়। এই ফাঁদের বিশেষ বৈশিষ্ট হলো নদীর তলদেশে লম্বালম্বিভাবে লেগে থাকে। ফলে কোন প্রকার খাদ্যদ্রব্য ছাড়াই দু’দিক থেকেই মাছ ঢুকে আটকা পড়ে। তবে কেউ কেউ অতিরিক্ত মাছের আশায় ঘ্রাণ জাতীয় মাছের খাবার দিয়ে থাকে। একটি চায়না দুয়ারীর দাম মান ভেদে ৪ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। প্রথমদিকে এই ফাঁদ জেলেদের কাছে খুব একটা পরিচিত না থাকলেও সময়ের সাথে সাথে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে। শুরুতে ফরিদপুর, মুন্সিগঞ্জ, মাগুরা, পাবনায় এই ফাঁদ তৈরি হলেও বর্তমানে নদী বেষ্টিত সব এলাকায়ই এই জাল তৈরি হচ্ছে। 

  গোয়ালন্দের জেলেরা জানান, চায়না দুয়ারীতে সব ধরণের মাছ ছেঁকে ওঠে, সহজেই মাছ ধরা যায় এবং দাম কম হওয়ায় তারা বেশীর ভাগ জেলে বর্তমানে এ দুয়ারী ব্যবহার করছেন। এছাড়া অনেক সৌখিন মৌসুমী মৎস্য শিকারীরাও মাছ ধরতে নেমেছেন। ফলে যারা পুরনো কৌশলে মাছ ধরনের তাদের জীবিকা নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়ায় তাদের অনেকেই বাধ্য হয়ে চায়না দুয়ারী কিনছেন।

  পদ্মা পাড়ের বাসিন্দারা জানান, বিকাল হলেই ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকায় করে এই চায়না দুয়ারী নদীতে ফেলা হয়। সারা রাত নদীতে রাখার পর সকালে তুলে আনা হয় পাড়ে। এ সময় জালে ধরা পড়ে দেশী প্রজাতির বিভিন্ন মাছ। নদীতে থাকা জলজ প্রাণী, এমনকি ছেঁকে ওঠে মাছের ডিমও। এ জাল দিয়ে মাছ ধরা অব্যাহত থাকলে কিছু দিন পর হয়তো নদীতে মাছ পাওয়াই কঠিন হবে।

  চায়না দুয়ারী দিয়ে মাছ শিকার করা একজন জেলে বলেন, চায়না দুয়ারী দিয়ে মাছ ধরা ঠিক না-তারপরও জীবিকার তাগিদে ধরি।

  এ ব্যাপারে গোয়ালন্দ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রেজাউল শরীফ বলেন, দেশী মাছ ধ্বংস করতে মাছ শিকারের মরণ ফাঁদে চায়না দুয়ারী নতুন সংযোজন। এই ফাঁদ বন্ধে মৎস্য আইনে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা নেই। তাই চায়না দুয়ারী বাজারে বিক্রি বন্ধে কারেন্ট জালের মতো কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাচ্ছে না। তবে নদীতে ব্যবহারের ক্ষেত্রে মাছ ধ্বংসের ধারা প্রয়োগে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়। আমরা সেভাবেই অভিযান পরিচালনা করছি। এছাড়া সকল প্রকার নিষিদ্ধ জালের বিরুদ্ধে প্রচার-প্রচারণা চলমান রয়েছে। 

পাংশা উপজেলা নির্বাচনে বুড়ো চেয়ারম্যান রিংকু ও ইতি ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী
কালুখালীতে চেয়ারম্যান পদে পুনরায় টিটো ভাইস চেয়ারম্যান পদে সুমন ও টুকটুকি বিজয়ী
পাংশা উপজেলা নির্বাচনে অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে বিজয়-----জেলা আওয়ামী লীগ নেতা মিতুল হাকিম
সর্বশেষ সংবাদ