ঢাকা সোমবার, মে ৬, ২০২৪
রাজবাড়ীতে ১১বছরের শারীরিক প্রতিবন্ধী শিশু শিলা ৬বছর খাঁচাবন্দী!
  • মীর সামসুজ্জামান সৌরভ
  • ২০২১-১১-২১ ১৩:৩৫:৫৮
শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী শিশু শিলা দাসকে পরিবারের সদস্যরা এ ভাবেই দীর্ঘ ৬বছর খাঁচাবন্দী করে রেখেছে -মাতৃকণ্ঠ।

শিলা দাস। বয়স মাত্র ৯বছর। সে শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী। হাঁটা চলা করতে পারে না, চলে হামাগুঁড়ি দিয়ে। তার এই ছোট্ট জীবনের ৬ বছর ধরেই কাটছে বন্দীদশায়।

  শিলা রাজবাড়ী জেলার কালুখালী উপজেলার মাজবাড়ী ইউনিয়নের পূর্ব ফুলকাউন্নাইর গ্রামের চন্দন কুমার দাস ও চন্দনা রাণী দাসের মেয়ে। ৩বছর বয়স থেকে তার শারীরিক সমস্যার বিষয়টি পরিবারের সদস্যরা বুঝতে পারে। তখন থেকেই তাকে খাঁচাবন্দী করে রাখা হয়েছে।

  পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শিলারা তিন ভাই-বোন। তার মধ্যে শিলা মেজ। তার বড় ভাই স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। আর ছোট ভাইয়ের বয়স দুই বছর। বাবা একটি সেলুনে কাজ করেন। সেই আয়ের টাকা দিয়েই মেয়েকে চিকিৎসার জন্য একাধিকবার ভারতে নিয়ে গেছেন। কিন্তু অবস্থার উন্নতি হয়নি। মানুষজনকে কামড়ে ও আঁচড়ে দেওয়ায় ঘরের বারান্দায় একটি খাঁচা তৈরী করে শিলাকে সেখানে আটকে রাখা হয়েছে।

  সরেজমিনে শিলাদের বাড়ীতে গিয়ে দেখা যায়, তাদের বাড়ীটি টিনের-মেঝে মাটির। ঘরের সামনে মাটির বারান্দার এক কোণে মোটা জাল দিয়ে ঘিরে রাখা খাঁচায় শিলার বাস। খাঁচার পাশেই রান্নাঘরে মা কাজের পাশাপাশি মেয়ের দেখভাল করেন।

  শিলার মা চন্দনা রাণী দাস বলেন, অনেক কবিরাজ, ডাক্তার দেখিয়েছি। কোন কাজ হয়নি। জমানো টাকা, জমিজমা বিক্রি করে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে নিয়ে গিয়েছিলাম। টাকার অভাবে সেখানে চিকিৎসা করাতে পারলাম না। এখন দেশে চিকিৎসা চলছে। প্রতিদিন ১৫০ টাকার ওষুধ লাগে। মাসে সাড়ে ৪হাজার টাকা। এখন ওর চিকিৎসা নিয়ে আমরা খুব চিন্তিত। 

  এলাকাবাসীরা জানান, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন এই শিশুটিকে নিয়ে তার বাবা-মায়ের দুঃখের শেষ নেই। দরিদ্র বাবা-মার সংসার চালানোই কষ্টসাধ্য। তার ওপর মেয়েটির চিকিৎসা করাতে বেগ পেতে হচ্ছে। সরকারসহ বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তারা।

  মাজবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী শরীফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি জানার পর শিশুটিকে একটি প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড করে দিয়েছিলাম। সেখান ৬ মাস পর পর সে ২১০০ টাকা করে পায়। কিন্তু সামান্য এই টাকা দিয়ে তার চিকিৎসার ব্যয় মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। তাই আমি আমার ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ও ব্যক্তিগতভাবে যতটুকু সম্ভব তাকে সহযোগিতা করছি।

  সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ ইব্রাহিম টিটন বলেন, খাঁচার মধ্যে আটকে রাখার বিষয়টি অমানবিক। এতে তার মস্তিকে বড় ধরনের ইফেক্ট পড়বে। সমাজসেবার অধীনে এ ধরনের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। তাকে সেখানে রাখা যেতে পারে। শিশুটির যেহেতু মস্তিস্কে সমস্যা সেহেতু তাকে একটি নিউরো সার্জনের অধীনে চিকিৎসা নেওয়া উচিত। 

  কালুখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ ইসমাইল হোসেন বলেন, সরকারীভাবে বা সমাজসেবায় এ রকম প্রতিবন্ধী শিশুদের রাখার ব্যবস্থা নেই কালুখালীতে। শিশুটি বাবা-মা ছাড়া থাকতে পারে না। এ জন্য শিশুটিকে দূরে কোথাও রাখা যাচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও সমাজকল্যাণ অধিদপ্তরের সমন্বয়ের মধ্যে আমরা প্রতিবন্ধীদের সহায়তা দিয়ে আসছি। ওই শিশুটিকেও সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে।

ফরিদপুর রেল স্টেশনে চন্দনা কমিউটার ট্রেনের স্টপেজ দাবীতে অবস্থান কর্মসূচি
আগামী দুই মাসের মধ্যে ভাঙ্গা-খুলনা-যশোর পর্যন্ত ট্রেন চালু হবে ঃ রেলপথ মন্ত্রী মোঃ জিল্লুল হাকিম
বসন্তপুরে ইমাম কমিটির উদ্যোগে খাবার স্যালাইন ও শরবত বিতরণ
সর্বশেষ সংবাদ