রাজবাড়ী জেলার পাংশায় নেশার টাকার জন্য পিতার বিরুদ্ধে কন্যা সন্তানকে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। প্রবাস থেকে ফিরে এ অভিযোগ করেন পাংশা পৌরসভার বিষ্ণুপুর গ্রামের সুকজান বেগম(৪০) নামে এক নারী। 
  তিনি জানান, প্রায় ২০ বছর আগে কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার বেতবাড়ীয়া ইউনিয়নের জাগলবা গ্রামের আব্দুল কাদের শেখের সাথে তার বিয়ে হয়। সংসার জীবনে তাদের দুই মেয়ে ও এক ছেলের জন্ম হয়। কিন্তু নেশাখোর স্বামী কাজকর্ম না করায় তিনি পরের বাড়ীতে ঝিয়ের কাজ করা শুরু করেন। তারপরও স্বামী নেশার টাকার জন্য তাকে নির্যাতন করতো। একপর্যায়ে স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে ২০০৯ সালে তিনি ৩ বছরের কন্যা সুমাইয়াকে নিয়ে পাংশার বিষ্ণুপুরে বাবার বাড়ীতে চলে আসেন। এরপর মায়ের কাছে মেয়েকে রেখে বিদেশে যান। বিদেশ যাওয়ার দুই-তিন মাস পর স্বামী কাদের শেখ এসে তার মায়ের কাছ থেকে সুমাইয়াকে নিয়ে যায়। এর কিছুদিন পর কাদের শেখ তাকে জানায় সুমাইয়া হারিয়ে গেছে। দুই বছর পরে বিদেশ থেকে দেশে ফিরে এসে খোঁজ-খবর নিয়ে তিনি জানতে পারেন নেশার টাকার জন্য স্বামী কাদের শেখ মেয়ে সুমাইয়াকে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের গটকা গ্রামের জনৈক মমিন মন্ডলের কছে বিক্রি করে দিয়েছে। তিনি অনেক চেষ্টা করেও মেয়েকে ফিরে পাচ্ছেন না। মেয়েকে ফিরে পেতে তিনি আইনের আশ্রয় নিবেন। 
  অভিযুক্ত আব্দুল কাদের শেখ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সংসারে অভাব-অনটনের জন্য তার স্ত্রী ৩ সন্তানকে ফেলে রেখে বাবার বাড়ী চলে যায়। ওই সময় মেয়ে সুমাইয়ার বয়স ছিল ৩ বছর। লালন-পালন করতে না পারায় তিনি মেয়েকে এতিমখানায় দিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তখন তার এক প্রতিবেশী মর্জিনা বেগমের ভাই মমিন মন্ডল মেয়েকে লালন-পালন করার দায়িত্ব নেয়ার ইচ্ছা পোষণ করে। তার ৩টি ছেলে সন্তান থাকলেও কোন মেয়ে না থাকায় সে আমার মেয়েকে দত্তক নেয়ার কথা বলে। পরে এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য মোসলেম আলী বিশ্বাসসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে মেয়েকে তার হাতে তুলে দেই। এখন বিদেশ থেকে ফিরে তার স্ত্রী মিথ্যা-বানোয়াট অভিযোগ করছে। 
  মমিন মন্ডল বলেন, আমার তিন ছেলে। মেয়ে না থাকায় সুমাইয়াকে নিজের মেয়ে হিসেবে লালন-পালন করার জন্য এনেছি। ওকে নিয়ে আসার সময় সেখানকার অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। মেয়েটিকে তিনি কিনে নেননি।