ঢাকা সোমবার, এপ্রিল ২৮, ২০২৫
রাজবাড়ীতে বার্ড ফ্লু নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকতে বললেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা
  • মীর সামসুজ্জামান সৌরভ
  • ২০২৫-০৪-২৭ ১৫:৫৮:২৪

 বাংলাদেশে ফের হাঁস-মুরগির দেহে অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লু রোগে ছড়িয়ে পড়েছে।
 রাজবাড়ীতে গত কয়েক মাসে বিভিন্ন এলাকার প্রান্তিক খামারীদের ও একটি বাণিজ্যিক পোলট্রি খামারের প্রায় ৪ হাজার মুরগী মারা গেছে। তবে কি কারণে মারা গেছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সিনটম পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে আতঙ্কিত না হয়ে খামারীদের সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।
 গতকাল ২৭শে এপ্রিল বিকেলে রাজবাড়ী শহরের কাজীকান্দা ব্যাংকপাড়া এলাকায় হাঁস-মুরগির মৃত্যুর বিষয় জানতে পেরে সরেজমিনে পরিদর্শন করাসহ নমুনা সংগ্রহ করেন সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ উমর ফারুক।
 তিনি সরেজমিনে পরিদর্শন করে অসুস্থ হাঁস-মুরগিগুলোকে দেখেন এবং খামারিদের সাথে কথা বলেন।
 খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১মাস ধরে রাজবাড়ী পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের কাজীকান্দা ব্যাংকপাড়া, দাদশী ইউনিয়নের চককেষ্টপুর, সদর উপজেলার বাগমারা এলাকায় অসংখ্য মুরগী মারা গেছে। ব্যাংকপাড়া এলাকার কৃষক জালাল উদ্দিন, হোসেন, বাচ্চু, মান্নান, আবুল, জিন্নাহ, আবু সাঈদ, রফিকসহ আরও কয়েকজনের বাড়ীর হাঁস-মুরগী এক এক করে সব মারা গেছে। ব্যাংক পাড়া এলাকার মাঠে ঘুঘু, বকসহ অন্যান্য পাখি মরে পড়ে থাকতে দেখেছে। এছাড়াও সদর উপজেলার বাগমারা এলাকার একটি হ্যাচারীর প্রায় ৪ হাজার মুরগি মারা গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
 কাজীকান্দা ব্যাংকপাড়া এলাকার বাসিন্দা মোঃ জালাল উদ্দিন বলেন, গত দেড় মাসে আমার প্রায় ৮০টি মুরগী মারা গেছে। আজকেও ৩টা মারা গেছে। প্রতিদিনই আমার মুরগী মারা যাচ্ছে। রোজার মধ্যে থেকে শুরু হয়েছে মুরগী মরা, হাঁসও মারা যাচ্ছে। এখনো সেটা অব্যাহত আছে। কি কারণে মারা যাচ্ছে আমরা রোগটাই ধরতে পারছি না। আমাদের আশপাশের সকল বাড়ীতেও একই অবস্থা। আমার পালানের সব মুরগী মারা যাচ্ছে। আমার হাঁসগুলোও অসুস্থ হয়ে হাঁটতে পারেনা। ডিম দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। আমি আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। আজকে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এসে স্যাম্পল নিয়ে গেলো। তারা এটা ঢাকায় পাঠিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করবে।
 রাজবাড়ী সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ উমর ফারুক বলেন, আমরা স্থানীয় ভাবে খবর পাই কাজীকান্দা ব্যাংকপাড়া এলাকার বাসিন্দা জালাল উদ্দিনের বাড়ীর পাশে হাঁস-মুরগি, ঘুঘু, শালিকসহ অন্যান্য পাখি মারা যাচ্ছে। তারপর এখানে স্যাম্পল সংগ্রহ করার জন্য এখানে আসি। আমরা কয়েকটি অসুস্থ হাঁস-মুরগি দেখতে পাই। সেই সব হাঁস-মুরগিগুলোর ঝুঁটি কালো হয়ে গেছে, পা কালে হয়ে গেছে। আমরা প্রাথমিকভাবে আশঙ্কা করছি কোন ভাইরাসজনিত রোগ হতে পারে। সংগ্রহকৃত স্যাম্পল গুলো আমরা ঢাকায় পাঠাবো। সেখান থেকে আমরা ডায়াগনোসিস করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
 তিনি আরও বলেন, অসুস্থ ও মৃত হাঁস-মুরগিগুলোকে মাটিতে পুঁতে ফেলতে হবে এবং সুস্থ মুরগি গুলোকে আলাদা করে রাখতে হবে। ভ্যাকসিন ছাড়া বার্ড ফ্লুর প্রতিকারের কোন উপায় নেই। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে ভ্যাকসিন বাণিজ্যিক খামারেই শুধু দেওয়া হয়। তবে পারিবারিক যে খামারগুলো রয়েছে সেখানে ভ্যাকসিন দেওয়াটা ফিজিবল না।
 খামারীদের উদ্দেশ্যে এই কর্মকর্তা বলেন, যারাই হাঁস-মুরগি বাণিজ্যিক খামারে লালন পালন করবেন তারা হাঁস-মুরগির জন্য সংক্রামক রোগের যে টীকা গুলো রয়েছে তা নিয়মিত ও যথাসময়ে দিতে হবে। তবে রাজবাড়ীতে এখন পর্যন্ত বার্ড ফ্লুর কোন প্রামাণিত রেকর্ড নেই।
 তিনি বলেন, যদি কখনো দেখা যায় যে প্রচুর হাঁস-মুরগি মারা যাচ্ছে সংক্রামক রোগে বা ছোঁয়াছে রোগে, অথবা পাখি মারা যাচ্ছে এর জন্য আমাদের পরামর্শ হলো কোন অসুস্থ হাঁস-মুরগি জবাই করে খাওয়া যাবে না। যেগুলো অসুস্থ হয়ে মারা যাবে বা অসুস্থ থাকবে সেগুলোকে দ্রুত মাটিতে গর্ত করে পুঁতে ফেলতে হবে। যেখানে সেখানে ফেলা যাবে না, যেখানে সেখানে ফেললে তা পরবর্তীতে পাশ্ববর্তী বাড়ীতে বা এলাকায় ছড়িয়ে পড়বে। অসুস্থ পাখি বা হাঁস-মুরগি খাওয়া যাবেনা। আতঙ্কিত না হয়ে খামারিদের সতর্ক থাকতে হবে।

 

রাজবাড়ীতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত সি ক্যাটাগরির ৭১জনের মাঝে চেক বিতরণ
রাজবাড়ীর ডাঃ রতন ক্লিনিকে সিজারিয়ান রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন
রাজবাড়ী জেলা পরিষদের মাসিক সভা॥গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা
সর্বশেষ সংবাদ