রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার হাবাসপুর এলাকায় পদ্মা নদীতে নেট দুয়াড়িতে ধরা পড়েছে মিঠা পানির বিরল প্রজাতির মহাবিপন্ন কুমির, যার অপর নাম ঘড়িয়াল। 
  ঘড়িয়ালটি জেলা বন বিভাগ উদ্ধার করে গতকাল ২১শে অক্টোবর বেলা ৩টার দিকে দৌলতদিয়া ফেরী ঘাটে নিয়ে এসে গাজীপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাফারী পার্কে সংরক্ষণের জন্য ঢাকা বন্য প্রাণী ইউনিটের নিকট হস্তান্তর করে। 
  জানা যায়, হাবাসপুর এলাকায় পদ্মা নদীতে সৌখিন মাছ শিকারী বাদশা মিয়া গত ২০শে অক্টোবর দুপুর ১২টার দিকে আগের দিন নদীতে পেতে রাখা ৩টি নেট দুয়াড়ির প্রথমটিতে ৪ ফিট ৮ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যরে মহাবিপন্ন ঘড়িয়ালটি ধরা পড়ে। খবর পেয়ে পাংশা উপজেলা প্রশাসন ঘড়িয়ালটি উদ্ধার করে জেলা বন বিভাগের নিকট হস্তান্তর করে। গোত্রভুক্ত ঘড়িয়াল শ্রেণীর এটি মেছো কুমির, ঘট কুমির নামেও পরিচিত। প্রধান খাদ্য মাছ বলে অনেকেই একে মেছো কুমির বলে। বাংলাদেশে পদ্মা, যমুনা, ব্রক্ষ্মপুত্র নদী এবং এ গুলোর শাখা-প্রশাখায় একসময় এদের প্রচুর দেখা যেত। কিন্তু আবাসস্থল ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে বাংলাদেশে প্রজননক্ষম কোন ঘড়িয়াল প্রকৃতিতে নেই বলেই বিশেষজ্ঞদের ধারণা। ঘড়িয়াল মহাবিপন্ন প্রাণী, যা বন্য প্রাণী(সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ দ্বারা সংরক্ষিত।
  সৌখিন মাছ শিকারী বাদশা সরদার বলেন, বাড়ীর পাশেই পদ্মা নদী শখ করে নেট দিয়ে ৩টি দুয়াড়ি তৈরী করেছি। প্রতিদিনের মতো গত মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে গোসলের সময় প্রথম নেট দুয়াড়িটি উঠাতেই বড় মাছ মনে করে আনন্দে চিৎকার দেই। পরে পানি থেকে উপরে এনে দুয়াড়ি খুলে দেখি কুমির। কুমিরটি দেখার জন্য প্রচুর লোকজন ভিড় করে। স্থানীয় চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় কুমিরটি উপজেলা প্রশাসনের নিকট দিয়ে দেই। 
  জেলা বন কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ঘড়িয়ালটি উদ্ধার করে সংরক্ষণের জন্য ঢাকা বন্য প্রাণী ইউনিটের কর্মকর্তা দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটে আসবেন। সংরক্ষণের জন্য এটিকে তাদের নিকট হস্তান্তর করা হবে। 
  দৌলতদিয়া ফেরী ঘাটে ঘড়িয়ালটি নিতে আসা ঢাকা বন্য প্রাণী ইউনিটের পরির্দশক আব্দুল্লাহ আস সাদিক বলেন, মহাবিপন্ন ঘড়িয়ালটি গাজীপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাফারী পার্কে সংরক্ষণ করা হবে। সাফারী পার্কে আরো ৩টি ঘড়িয়াল রয়েছে। এটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে ঐ ৩টির সাথে রাখা হবে।